রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বর্তমানে দিন ও রাতে বেশ গরম অনুভূত হলেও সিলেটসহ উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমে যাচ্ছে। তাপমাত্রার এমন বৈচিত্র্য শুধু দেশেই নয়, বিশ্বের নানা প্রান্তে দেখা যায়। আর তাই কোনো দেশে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলেও পৃথিবীর অন্য প্রান্তের দেশগুলো বরফে ঢাকা থাকে। সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহ ও চাঁদের তাপমাত্রায়ও এ ধরনের বৈচিত্র্য দেখা যায়।

বুধ গ্রহের দিনের তাপমাত্রা ৪৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর রাতের তাপমাত্রা মাইনাস ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্র গ্রহের গড় তাপমাত্রা ৪৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্র গ্রহের বায়ুমণ্ডল খুবই ঘন, তাই তাপমাত্রা এত বেশি। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও আমাদের চাঁদের দিনের তাপমাত্রা ১২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর রাতের তাপমাত্রা মাইনাস ১৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চাঁদের তাপমাত্রা দিন ও রাতের মধ্যে খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনপৃথিবী থেকে ৪৭ আলোকবর্ষ দূরে রহস্যময় এক গ্রহের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা২৫ মার্চ ২০২৫

অন্যদিকে লাল গ্রহ হিসেবে পরিচিত মঙ্গলের গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলের মেরু অঞ্চলে শুষ্ক বরফ ও জলীয় বরফের স্তর রয়েছে। বিশাল বৃহস্পতি গ্রহের গড় তাপমাত্রা মাইনাস ১৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আরেক বড় গ্রহ শনির গড় তাপমাত্রা মাইনাস ১১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ইউরেনাসের গড় তাপমাত্রা মাইনাস ১৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং নেপচুনের গড় তাপমাত্রা মাইনাস ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আরও পড়ুনঅন্য সব গ্রহে নতুন বছরের হিসাব কেমন৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়ায় সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহের তুলনায় অনেক বেশি সহনীয়। বুধ ও শুক্র গ্রহের তাপমাত্রা অনেক বেশি বলে সেখানে জীবনধারণের সুযোগ নেই। অন্যদিকে মঙ্গল গ্রহের তাপমাত্রা অনেক কম। তবে সেখানে বরফ থাকার প্রমাণ মেলায় ভবিষ্যতে জীবনধারণের সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। অন্যদিকে বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন কিছুটা গ্যাসীয় গ্রহ। এসব গ্রহে তাপমাত্রা অনেক কম বলে জীবনধারণের জন্য অনুপযুক্ত।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ইন স স লস য

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি

বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ১০ গুণ বড় ‘ওয়াস্প-১৮ বি’ নামের দৈত্যকার একটি দূরবর্তী গ্যাসীয় গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে এবারই প্রথম সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই যুগান্তকারী মানচিত্র গ্রহ বিজ্ঞানের একটি বড় পদক্ষেপ। সূর্যের বাইরের অন্য কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র এর আগে তৈরি করা হয়নি। মানচিত্র তৈরির এ কৌশল ব্যবহার করে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত ছয় হাজারের বেশি বহির্গ্রহকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।

বহির্গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক দিনের। সৌরজগতের বাইরের নানা ধরনের গ্রহ দেখা যায়। কিছু গ্রহ আছে যাদের দুষ্টু গ্রহ বলা হয়। এসব গ্রহ কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে না। মহাবিশ্বে অনেকটা স্বাধীনভাবে বা বন্ধনহীনভাবে ভেসে বেড়ায়। নাসার এক্সোপ্ল্যানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ২৮টি বহির্গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। আরও প্রায় আট হাজার বহির্গ্রহ গ্রহের মর্যাদার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, থ্রিডি ইক্লিপস ম্যাপিং কৌশল ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রটি তৈরি করেছেন। এই প্রক্রিয়া স্পেকট্রোস্কোপিক ইক্লিপস ম্যাপিং নামেও পরিচিত। এর আগে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে বহির্গ্রহের টুডি বা দ্বিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন বহির্গ্রহ পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন বলে নতুন ত্রিমাত্রিক মানচিত্র বেশ উপকারী হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আবিষ্কৃত ওয়াস্প-১৮ বি গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উপস্থিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান চ্যালেঞ্জার বলেন, ‘টেলিস্কোপ ও এই নতুন কৌশলটির মাধ্যমে আমরা আমাদের সৌরজগতের প্রতিবেশীদের মতোই বহির্গ্রহকে বোঝার সুযোগ পাব।’

সূত্র: স্পেস ডট কম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি