চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার জোড়া খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে আগে থেকে কারাগারে থাকা সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে। রবিবার (৬ এপ্রিল)  চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালত পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। 

এদিকে, একই দিন এই সন্ত্রাসীকে তাহসিন হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে শুনানি শেষে বিচারক তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন গ্রেপ্তার ও রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে আসামি ছোট সাজ্জাদকে আদালতে হাজির করা হয়।

আরো পড়ুন:

ইনু-মেনন-আনিসুল-দীপু মণি-সাদেক খানের আবার রিমান্ড

চার মামলায় ১৯ দিন রিমান্ডে সাবেক এমপি ছানোয়ার

গত ১৫ মার্চ দিবাগত রাতে রাজধানীর তেজগাঁও থানার বসুন্ধরা সিটি থেকে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ২৯ মার্চ দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে বাকলিয়া থানার এক্সেস রোড এলাকায় প্রাইভেটকারে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মো.

আব্দুল্লাহ ও মো. মানিক নামে দুইজন নিহত হন। এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী হিসেবে কারাগারে থাকা সাজ্জাদের নাম উঠে আসে। পরে এই জোড়া খুনের মামলায় সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীকে হুকুমের আসামি করে পুলিশ। আজ রবিবার সাজ্জাদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে জোড়া খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য পুলিশ আদালতে আবেদন জানায়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।

একইদিন আসামি ছোট সাজ্জাদকে নগরের চান্দগাঁও থানার তাহসিন হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নগরীর চান্দগাঁও থানার অদুরপাড়ায় গত বছরের ২১ অক্টোবর বিকেলে একদল যুবক প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে তাহসিনকে। এলাকার আধিপত্য নিয়ে দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সারোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা ও ছোট সাজ্জাদের বিরোধে খুন হন তাহসিন। নিহত তাহসিন বাবলার অনুসারী ছিলেন।

‘বুড়ির নাতি’ নামে পরিচিত ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ। গত ২৮ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে হুমকি দিয়েছিলেন ছোট সাজ্জাদ। গত ৩০ জানুয়ারি ছোট সাজ্জাদকে ধরতে তথ্যদানকারী কিংবা সহায়তাকারীকে নগদ অর্থ পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

গত ৩০ জানুয়ারি বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ ছোট সাজ্জাদ ওরফে বুড়ির নাতি সাজ্জাদকে (২৫) আইনের আওতায় আনার জন্য তার অবস্থান সংক্রান্তে সঠিক তথ্য দিয়ে গ্রেপ্তারে যে পুলিশকে সহায়তা করবে, তাকে উপযুক্ত অর্থ পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হবে।

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ক জ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাঝপথে জ্বালানি শেষ স্পিডবোটের, ২৭ যাত্রী নিয়ে ভেসে ছিল আড়াই ঘণ্টা

সন্দ্বীপ চ্যানেলে দুর্ঘটনায় পড়া একটি স্পিডবোট আড়াই ঘণ্টা সাগরে ভেসে থাকার পর কূলে পৌঁছেছে। বোটটিতে ৩ শিশু, ২ নারীসহ মোট ২৭ জন যাত্রী ছিলেন।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা বোটটি বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট কুমিরা উপকূলে পৌঁছায়। বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি হলো সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস।

বোটের কয়েকজন যাত্রী প্রথম আলোকে জানান, কুমিরা ঘাটের কাছাকাছি আসতেই বোটটির গতি কমে যায়। এরপর প্রবল ঢেউ ও স্রোতের মুখে বারবার পানিতে আছড়ে পড়তে থাকে। চালক তখন যাত্রীদের জানান, বোটের জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে বোটের সামনের অংশে পানি ঢুকতে দেখা যায়। আতঙ্কিত যাত্রীরা তখন চিৎকার করতে থাকেন। পরে বোটটি ভাসতে ভাসতে কূলে পৌঁছায়।

বোটে থাকা যাত্রী ফুয়াদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোটের তলা ফেটে পানি ঢুকছে আর আমরা এক কিলোমিটার দূরে উত্তাল সাগরে ভাসছি। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল বেঁচে ফিরতে পারব না, এমনকি সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার কথাও ভাবছিলাম। কিন্তু ভাগ্য ভালো, শেষ পর্যন্ত কূলে পৌঁছাতে পেরেছি।’

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সবাই নিরাপদে কূলে নামতে সক্ষম হন বলে জানান ফুয়াদ।

বিকেলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্পিডবোট ডুবে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রাণহানির আশঙ্কায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টির কারণ জানতে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

জানতে চাইলে বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বোটের জ্বালানি শেষ হয়নি। তীব্র স্রোতের কারণে বোটটি কুমিরা ঘাট থেকে উত্তরে সরে গিয়ে তীরের কংক্রিট ব্লকে ধাক্কা খায়। এতে বোটের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু যাত্রীরা সবাই নিরাপদে কূলে পৌঁছাতে সক্ষম হন।’

বৈরী আবহাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বোট চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সার্ভিস বন্ধ ছিল। তবে বিদেশগামী কয়েকজন যাত্রীর অনুরোধে এই একটি ট্রিপ চালু করতে হয়েছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই সময়ে বোট চলাচলের অনুমতি ছিল না। তিনি বলেন, মাঝ সাগরে জ্বালানি শেষ হওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তার দায় চালক ও মালিকের। ইতিমধ্যে স্বত্বাধিকারীদের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। চালকের লাইসেন্স স্থগিত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ