মহেন্দ্র সিং ধোনির আইপিএল অধ্যায়ের ইতি কবে এ প্রশ্ন নিয়েই গুঞ্জন চলছেই। চেন্নাই সুপার কিংসের সাবেক অধিনায়ক এবার যেন নিজেকেই ছায়া মনে হচ্ছিল অনেকের কাছে। তার ওপর জোরালো হচ্ছে অবসরের জল্পনা। কেউ কেউ তো বলেই দিয়েছেন, ধোনির আগেই ক্রিকেটকে বিদায় জানানো উচিত ছিল।
শনিবার দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ম্যাচে প্রথমবার মাঠে বসে খেলা উপভোগ করেন ধোনির বাবা পান সিং এবং মা দেবকী। এর আগে ধোনির স্ত্রী সাক্ষী ও মেয়ে জিভার কথোপকথনের একটি ভিডিওতে 'শেষ ম্যাচ' শব্দ দু'টি ভাইরাল হলে নতুন করে অবসরের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে এবার নিজেই অবসর প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন ধোনি।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাজ শামানির একটি পডকাস্টে ধোনি বলেন, 'এখনই অবসর নিয়ে ভাবছি না। এখনও তো আইপিএল খেলছি। বিষয়টা খুব সাধারণভাবে নিচ্ছি। আমি তো এখন শুধু আইপিএলেই খেলি। এখন বয়স ৪৩, ২০২৫ আইপিএল শেষ হতে হতে ৪৪ হয়ে যাবে। তারপর হাতে ১০ মাস থাকবে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য। খেলব কি না, ছাড়ব কি না—সেটা শরীর ঠিক করে দেবে, আমি না। সব মিলিয়ে এখনও একটা বছর সময় আছে।'
ধোনির বক্তব্যে স্পষ্ট, শরীর যদি টি-টোয়েন্টির চ্যালেঞ্জ নিতে পারে, তাহলে খেলে যাবেন। অন্যথায়, তখনই বিদায়ের সিদ্ধান্ত নেবেন। আপাতত অবশ্য খেলার মজা নিতে চান এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। তার ভাষায়, 'আমি এখন আইপিএলটা উপভোগ করছি। স্কুলজীবনে যেভাবে রোজ বিকেলে খেলতে যেতাম, এখনো ঠিক তেমনই খেলছি। তখন রোজ ৪টায় কলোনির মাঠে খেলতাম। আবহাওয়া খারাপ থাকলে ফুটবল খেলতাম। আমি সেই সহজ-সরল আনন্দটা পেতে চাই। যদিও বলা সহজ, করা কঠিন।'
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের পর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা যায়নি ধোনিকে। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকেও তিনি অনেক আগেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে শুধুই আইপিএলের জন্য মাঠে নামেন ৪৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ