রংপুরে শহীদ আবু সাঈদ হত্যার ঘটনাস্থল ঘুরে দেখলেন প্রধান বিচারপতি
Published: 6th, April 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে প্রধান বিচারপতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু সাঈদ ফটকে যান। প্রধান বিচারপতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো.
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘১৯৬৯ সালে আইয়ুব খান বিরোধী আন্দোলনের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হামলার মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন। ২০২৪ সালে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। জুলাই বিপ্লবেও আমরা হারিয়েছি আবু সাঈদের মতো আরেক মহান যোদ্ধাকে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের একটি প্রতীক হলো ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা। বহু দশক পর ঠিক সেটারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের মাধ্যমে। আবু সাঈদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন বলে জানান।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ আরও বলেন, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের কয়েকটি মামলা বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চলমান আছে। এই বিচার সুষ্ঠু ও সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে বিচার বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. ফেরদৌস রহমান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক মো. ইলিয়াছ প্রামাণিক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার মো. আবু সাইমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ৫ দিনের সফরে গত শুক্রবার রংপুরে আসেন। আজ দুপুরে তিনি রংপুরের জজ আদালতসহ বিভিন্ন আদালত পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব গম র ক য় স ঈদ র
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ