বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে প্রধান বিচারপতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু সাঈদ ফটকে যান। প্রধান বিচারপতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো.

শওকাত আলী। এ সময় শহীদ আবু সাঈদের সহপাঠী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। গত বছরের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘১৯৬৯ সালে আইয়ুব খান বিরোধী আন্দোলনের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হামলার মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন। ২০২৪ সালে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। জুলাই বিপ্লবেও আমরা হারিয়েছি আবু সাঈদের মতো আরেক মহান যোদ্ধাকে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের একটি প্রতীক হলো ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা। বহু দশক পর ঠিক সেটারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের মাধ্যমে। আবু সাঈদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন বলে জানান।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ আরও বলেন, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের কয়েকটি মামলা বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চলমান আছে। এই বিচার সুষ্ঠু ও সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে বিচার বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করছে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. ফেরদৌস রহমান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক মো. ইলিয়াছ প্রামাণিক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার মো. আবু সাইমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ৫ দিনের সফরে গত শুক্রবার রংপুরে আসেন। আজ দুপুরে তিনি রংপুরের জজ আদালতসহ বিভিন্ন আদালত পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব গম র ক য় স ঈদ র

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা