অনুষ্ঠানে মারামারি কনেকে ছাড়াই ফিরে গেল বরপক্ষ
Published: 6th, April 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বিয়ের অনুষ্ঠানের গেটে পার্টি স্প্রে দেওয়া নিয়ে বর ও কনেপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কনেকে না নিয়েই ফেরত গেছে বরপক্ষ।
গত শুক্রবার উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রোববার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কনের বাবা।
স্থানীয় সূত্র ও কনেপক্ষের লোকজন জানায়, পুটিয়া গ্রামের সোমেদ আলী মাতুব্বরের মেয়ের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী সদরপুর উপজেলার চরব্রাহ্মন্দী ভেন্নতুলী গ্রামের তৈয়ব মোল্লার ছেলে প্রবাসী নাঈম মোল্লার সঙ্গে মোবাইল ফোনে বিয়ে হয়। শুক্রবার বিয়ে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। যথাসময়ে বরযাত্রী আসে। কিন্তু বিয়ের গেটে মাত্রাতিরিক্ত পার্টি স্প্রে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন বরযাত্রীরা। এ নিয়ে কনেপক্ষের লোকজনের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হন তারা। এক পর্যায়ের উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে কনের বাবাসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। একপর্যায়ে বরযাত্রীরা বউ না নিয়ে ফেরত যান।
কনের বাবা বলেন, বিয়ের গেটে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে স্প্রে করছিল। এ সময় বরপক্ষের লোকজনও স্প্রে করতে ছিল। এর মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে ঠেলা-ধাক্কা, হাতাহাতি শেষে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে অনুষ্ঠানের চেয়ার-টেবিল ও অনেক খাবার নষ্ট হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনায় তিনি বরপক্ষের লোকজনের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন কিন্তু তারা কোনো কথা শোনেনি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বর নাঈম মোল্লা ও তাঁর বাবা তৈয়ব মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
কাউলিবেড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, বিয়ের গেটে পার্টি স্প্রে দেওয়া নিয়ে মারামারি হয়। কনে ছাড়াই বরপক্ষকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রজিৎ মল্লিক বলেন, কনের বাবা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যৌতুকের টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার বাকি রাখতে চাওয়ায় বরপক্ষের হামলা, আহত ৪
ভোলার লালমোহন উপজেলায় যৌতুকের টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার বাকি রাখতে চাওয়ায় বরপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কনের মা-বাবা, বোন ও চাচা আহত হয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোলপাড় এলাকার আনা মিয়া কালু ব্যাপারীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। হামলার পর বরপক্ষের লোকজন খাল সাঁতরে পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কনের ফুফু মমতাজ বেগম বলেন, গত ঈদুল ফিতরের সময় তাঁর বড় ভাই মো. বিল্লালের বড় মেয়ে সালেহা বেগমের সঙ্গে লালমোহন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল মালেকের ছেলে মো. রুবেলের সঙ্গে পারিবারিক সিদ্ধান্তে বিয়ে হয়। তখন বরপক্ষ যৌতুক হিসেবে দুই লাখ টাকা ও দুই ভরি সোনা দাবি করে। গতকাল দুপুরে কনেকে উঠিয়ে নিতে কনের বাড়িতে আসেন বরপক্ষের লোকজন। তাঁদের সঙ্গে কথা ছিল দুপুরে ৫০ জন খাবেন। কিন্তু তাঁরা এসেছেন ৬৫ জন। বরপক্ষ আসবে শুনে বাড়ির ছোট ছোট মেয়েরা গেট তৈরি করেছে। তবে বরপক্ষের লোকজন বাড়িতে এসেই উত্তেজিত হয়ে বলেন, আগে যৌতুকের টাকা ও সোনা দিতে হবে। তারপর খাবার খেয়ে তাঁরা কনেকে নেবেন।
মমতাজ বেগম আরও বলেন, কনের বাবা তখন বাকি টাকা ও সোনার জন্য সময় চান। তখন ছেলের বাবা কোনো টাকা বাকি থাকলে কনেকে নেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেন। একপর্যায়ে বরের বড় ভাই মো. হাসান গেট ও চেয়ার ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় বরের সঙ্গে আসা অন্তত ৮ থেকে ১০ জন কনের পরিবারের লোকজনকে চেয়ার দিয়ে মারতে শুরু করেন। এরপর তাঁরা খাওয়াদাওয়া না করেই খাল সাঁতরে এবং কেউ নৌকা দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে বর মো. রুবেল বলেন, ‘আমি পেছনে ছিলাম। তবে গেটে আমার বড় ভাইয়ের সঙ্গে কী নিয়ে ঝামেলা হয়েছে, তা আমি জানি না।’
এ বিষয়ে লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, হামলায় আহত হয়ে কনেপক্ষের লোকজন থানায় এলে চিকিৎসার জন্য তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সুস্থ হয়ে তাঁরা লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।