কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় এক কৃষকের ৫০ শতাংশ জমির করলা ও চিচিঙ্গাগাছ উপড়ে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার রাতের কোনো এক সময় উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নের নয়নসুখ গ্রামের ডুবাইল বিল এলাকার কৃষক আঞ্জু মিয়ার জমিতে এ ঘটনা ঘটে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আঞ্জু মিয়া বলেন, প্রতিবেশী এক ব্যক্তির জমি তিনি ৩৫ হাজার টাকায় পত্তন নিয়ে এতে করলা ও চিচিঙ্গা চাষ করেছিলেন। দিনরাত পরিশ্রমের পর খেতে ফলনও আসতে শুরু করেছে। ফলনও ভালো হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে সবজি বিক্রি করতে পারতেন তিনি। আজ সোমবার ভোরে জমিতে এসে দেখেন, ৫০ শতক জমির প্রায় এক হাজার করলাগাছ ও চিচিঙ্গাগাছ মাটি থেকে উপড়ে ফেলা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আরও জানান, প্রায় দেড় মাস আগে তিনি করলা ও চিচিঙ্গা চাষ করেন। ধারদেনা করে এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ টাকার মতো খরচ করেছেন। তবে এত বড় ক্ষতির শিকার হবেন তিনি, সেটা ভাবতেও পারেননি। কারও সঙ্গে তাঁর শত্রুতা নেই। তাঁর নিজের কোনো জমি নেই। তাই অপর মানুষের জমি পত্তন নিয়ে চাষ করে সংসার চালান। এ ঘটনায় তিনি ও তাঁর পরিবারের অনেক বেশি ক্ষতি হয়ে গেল। দেনা-পাওনা কীভাবে শোধ করবেন, সেটিও ভেবে পাচ্ছেন না।

আজ সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপড়ে ফেলা গাছগুলো রোদে শুকিয়ে গেছে। ছোট ছোট করলাগুলোও শুকিয়ে গেছে। জমির পাড়ে চিন্তিত হয়ে আঞ্জু মিয়া ঘোরাঘুরি করছেন। তাঁর মা হেনা আক্তার জমির পাড়ে গিয়ে কান্নাকাটি করছিলেন। এ সময় স্থানীয় কৃষকেরা দাবি করেন, গ্রামের কোনো একটি বিষয়ের ঝগড়া নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে একজন গরিব কৃষকের স্বপ্ন ও পরিশ্রমকে ধ্বংস করা হয়েছে।

গতকাল রোববার রাতের কোনো এক সময় কৃষক আঞ্জু মিয়ার ৫০ শতাংশ জমির করলা ও চিচিঙ্গাগাছ উপড়ে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র করল

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ