সাখাওয়াত হোসেনের বয়স তখন ১৬ কিংবা ১৭ বছর। সে সময় বাবা কাশেম মোড়ল তালগাছ থেকে রস সংগ্রহ করতেন। এ বয়সে বাবার কাছ থেকে শিখে নেন কীভাবে রস সংগ্রহ করতে হয়। এরপর পেরিয়ে গেছে ৫১ বছর। আজও রস সংগ্রহ করছেন তিনি, যেন তালগাছ কাটা তাঁর নেশায় পরিণত হয়েছে। এ বয়সে এসেও গাছে উঠে দিব্যি রস সংগ্রহ করছেন। এক দিন না পারলে ভালো লাগে না তাঁর।
যশোরের কেশবপুর উপজেলার বায়সা-শ্রীরামপুর সড়কের পাশের ১২টি তালগাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন সাখাওয়াত হোসেন। বাবার হাত ধরে তালের মুচি কেটে রস সংগ্রহ করতে শেখা এ গাছির বয়স এখন ৬৮ বছর। এ গাছি তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে যত্নসহকারে মুচি ও জটা কেটে রস সংগ্রহ করেন। কখন কীভাবে কাটলে সুস্বাদু রস বের হয়, তা তিনি বুঝতে পারেন।
সাখাওয়াত হোসেন ৫১ বছর ধরে তালের রস সংগ্রহ করায় এলাকায় বেশ খ্যাতিও রয়েছে। রস বিক্রি করে সাতজনের সংসার চালান তিনি। প্রতিদিন তিনবেলা বাঁশ বেয়ে তালগাছে উঠে মুচি কেটে ভাড় (মাটির পাত্র) পাতেন। এসব গাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৫ ভাড় করে রস পাওয়া যায়। টাটকা ও সুস্বাদু এ রস খেতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন। তিনি এখন এলাকায় ‘সাখাওয়াত দাদু’ নামেও পরিচিত।
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় কীভাবে ভাড় পোড়ালে এবং কখন মুচি কাটলে সুস্বাদু রস বের হয়, তা বুঝতে পারেন বলে জানান গাছি সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, রস টাটকা রাখতে আগুনের ধোঁয়া দেওয়া ভাড়ে হিসাব করে লাগাতে হয় চুন। গাছ থেকে রস নামানো মাত্রই বিক্রি হয়ে যায়। গাছতলায় বসে তা বিক্রি করেন তাঁর ছেলে ফজর আলী।
১২টি তালগাছ থেকে অন্তত ১৫ ভাড় রস পাওয়া যায় বলে জানান ফজর আলী (৪৬)। তিনি বলেন, টাটকা ও সুস্বাদু রস খেতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করেন। প্রতি গ্লাস ১০ টাকায় বিক্রি করেন। এ টাকায় সংসার চলে। আগামী পাঁচ মাস এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা যাবে। বাবার কাছ থেকে তিনিও তালগাছ কাটা শিখছেন।
তালের রস খেতে আসা উপজেলার মধ্যকুল গ্রামের কামরুজ্জামান বলেন, ‘সাখাওয়াত দাদুর গাছ কাটার সুনাম শুনে এ মৌসুমে প্রথম তালের রস খেতে এসেছি। রস খুব সুস্বাদু। বাড়ির জন্যেও বোতলে করে নিয়ে যাচ্ছি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ল র রস রস খ ত

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে এখনো শাহবাগে অবরোধকারীরা

জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং স্থায়ী বিধানে যুক্ত করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে আজ শুক্রবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’। গতকালের মতো আজকেও শাহবাগে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের (আহত) ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে এ কর্মসূচি নেওয়া হয়।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে শাহবাগ মোড়ে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে অবরোধকারীরা অবস্থান করছেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ