৫১ বছর ধরে দাদুর তালের রসের স্বাদ নিচ্ছেন মানুষ
Published: 8th, April 2025 GMT
সাখাওয়াত হোসেনের বয়স তখন ১৬ কিংবা ১৭ বছর। সে সময় বাবা কাশেম মোড়ল তালগাছ থেকে রস সংগ্রহ করতেন। এ বয়সে বাবার কাছ থেকে শিখে নেন কীভাবে রস সংগ্রহ করতে হয়। এরপর পেরিয়ে গেছে ৫১ বছর। আজও রস সংগ্রহ করছেন তিনি, যেন তালগাছ কাটা তাঁর নেশায় পরিণত হয়েছে। এ বয়সে এসেও গাছে উঠে দিব্যি রস সংগ্রহ করছেন। এক দিন না পারলে ভালো লাগে না তাঁর।
যশোরের কেশবপুর উপজেলার বায়সা-শ্রীরামপুর সড়কের পাশের ১২টি তালগাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন সাখাওয়াত হোসেন। বাবার হাত ধরে তালের মুচি কেটে রস সংগ্রহ করতে শেখা এ গাছির বয়স এখন ৬৮ বছর। এ গাছি তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে যত্নসহকারে মুচি ও জটা কেটে রস সংগ্রহ করেন। কখন কীভাবে কাটলে সুস্বাদু রস বের হয়, তা তিনি বুঝতে পারেন।
সাখাওয়াত হোসেন ৫১ বছর ধরে তালের রস সংগ্রহ করায় এলাকায় বেশ খ্যাতিও রয়েছে। রস বিক্রি করে সাতজনের সংসার চালান তিনি। প্রতিদিন তিনবেলা বাঁশ বেয়ে তালগাছে উঠে মুচি কেটে ভাড় (মাটির পাত্র) পাতেন। এসব গাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৫ ভাড় করে রস পাওয়া যায়। টাটকা ও সুস্বাদু এ রস খেতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন। তিনি এখন এলাকায় ‘সাখাওয়াত দাদু’ নামেও পরিচিত।
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় কীভাবে ভাড় পোড়ালে এবং কখন মুচি কাটলে সুস্বাদু রস বের হয়, তা বুঝতে পারেন বলে জানান গাছি সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, রস টাটকা রাখতে আগুনের ধোঁয়া দেওয়া ভাড়ে হিসাব করে লাগাতে হয় চুন। গাছ থেকে রস নামানো মাত্রই বিক্রি হয়ে যায়। গাছতলায় বসে তা বিক্রি করেন তাঁর ছেলে ফজর আলী।
১২টি তালগাছ থেকে অন্তত ১৫ ভাড় রস পাওয়া যায় বলে জানান ফজর আলী (৪৬)। তিনি বলেন, টাটকা ও সুস্বাদু রস খেতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করেন। প্রতি গ্লাস ১০ টাকায় বিক্রি করেন। এ টাকায় সংসার চলে। আগামী পাঁচ মাস এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা যাবে। বাবার কাছ থেকে তিনিও তালগাছ কাটা শিখছেন।
তালের রস খেতে আসা উপজেলার মধ্যকুল গ্রামের কামরুজ্জামান বলেন, ‘সাখাওয়াত দাদুর গাছ কাটার সুনাম শুনে এ মৌসুমে প্রথম তালের রস খেতে এসেছি। রস খুব সুস্বাদু। বাড়ির জন্যেও বোতলে করে নিয়ে যাচ্ছি।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দাবি মেনে নেওয়ায় অনশন ভাঙলেন জবি শিক্ষার্থীরা
দাবি মেনে নেওয়ায় ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজ্জাম্মুল হক ও অন্যান্য শিক্ষকরা আন্দোলনকারীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান। গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে দুপুর থেকে রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেছিলেন।
আরো পড়ুন:
যবিপ্রবিসাসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
জানুয়ারি থেকে বিশেষ বৃত্তি পাবেন জবি শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কার্যকর হওয়ার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা; জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ; ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে আধুনিক সুবিধা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু।
অনশনকারী বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, “আমাদের দাবি ছিল বৃত্তি প্রদানের নির্দিষ্ট তারিখ, জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা এবং লাইব্রেরিতে সুবিধা বৃদ্ধি। প্রশাসন এগুলো মেনে নিয়েছে। কিছুটা ধোঁয়াশা থাকলেও আমরা আস্থা রেখে অনশন ভেঙেছি।”
বাগছাসের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ বলেন, “আমাদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নিয়ে স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা আশা করি, প্রশাসন প্রতিশ্রুতিগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করবে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন স্বপ্নের দুয়ার উন্মোচিত হবে।”
অনশনকারী শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এমকেএম রাকিব বলেন, “প্রশাসন আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে, এতে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করি, শিক্ষার্থীরা দ্রুতই তাদের কাঙ্ক্ষিত বৃত্তি পাবে এবং অন্যান্য ক্যাম্পাসের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও নির্বাচনের আমেজ তৈরি হবে।”
অনশনে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক পর এবারই প্রথমবারের মতো জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলো।
ঢাকা/লিমন/ইভা