রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে আরাকান আর্মি সম্মত বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, ঈদের আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। 

ড. খলিলুর বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সময় বিবদমান দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি দরকার। তাই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে বাংলাদেশ। উভয় পক্ষকে এক টেবিলে বসাতে কাজ করছে জাতিসংঘ।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার বিমসটেক সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী দুই বছর বিমসটেক সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যোগসূত্র তৈরি এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে ভূমিকা রাখবে বাংলাদেশ। এতে শুধু সমুদ্রতীরের দেশ নয়, আরও অনেক দেশ উপকৃত হবে। 

সাইডলাইনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক প্রসঙ্গে ড.

খলিলুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানালে মোদি জানান, ব্যক্তি বা দল নয়, বরং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক হবে রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের।

গত সোমবার ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি বলেন, যখনই অন্তর্বর্তী সরকার ভালো কাজ করতে চেয়েছে, তখনই ভালো কাজগুলো লাইনচ্যুত করার চেষ্টা দেখা গেছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ