ভুটান ফুটবলে স্বাগত ঋতুপর্ণারা, কে কোন ক্লাবে
Published: 9th, April 2025 GMT
সাবিনা খাতুনকে দিয়ে শুরু বিদেশি ফুটবলে বাংলাদেশের মেয়েদের পদচারণা। সংখ্যাটা এক-দুইয়ের মধ্যেই ছিল দীর্ঘদিন। গত আগস্টে এএফসি নারী চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সাবিনা খাতুন, মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্ডা ও ঋতুপর্ণা চাকমা খেলেছিলেন ভুটানের ক্লাব রয়্যাল থিম্পু এফসিতে। এতদিন সেটাই ছিল বিদেশি কোনো লিগে সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশ নারী ফুটবলারের অংশগ্রহণ।
এবার ভুটানে আগের সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি বাংলাদেশি নারী ফুটবলার খেলছেন। নতুন আঙ্গিকে ১০ ক্লাব নিয়ে ১৯ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া ভুটান নারী ফুটবল লিগে তিন ক্লাবে বাংলাদেশের ১০ ফুটবলার চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তারা সবাই ২০২৪ সালে নেপালে নারী সাফ শিরোপা জেতা দলের সদস্য। বলা যায়, ভুটান ফুটবলে বাংলাদেশিদের চাহিদা এখন তুঙ্গে।
প্রথমে ডাক আসে চার ফুটবলারের। ফিফার এজেন্ট নিলয় বিশ্বাসের মাধ্যমে পারো এফসিতে নাম লেখান জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা, ঋতুপর্ণা, মনিকা ও মাতসুশিমা সুমাইয়া। ইতোমধ্যে তারা ভুটানে গিয়ে ক্লাবের হয়ে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন। বাকি ছয় ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তিটা সরাসরি করেছে ক্লাব। ট্রান্সফোর্ট ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় মাসুরা পারভীন, কৃষ্ণা রানী সরকার ও রুপনা চাকমা। এই ক্লাবের জার্সিতে খেলার কথা ছিল সাগরিকার। কিন্তু তাঁর বয়স আঠারোর কম হওয়ায় ভাগ্য খোলে কৃষ্ণার। সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা ও শামসুন্নাহার সিনিয়র চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন থিম্পু সিটিতে।
দেশের নারী ফুটবলের ইতিহাসে এই প্রথম একসঙ্গে ১০ ফুটবলার বিদেশি কোনো লিগে খেলছেন। ফিফার এজেন্ট নিলয় বিশ্বাস ফুটবলার নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়া গতকাল সমকালের কাছে তুলে ধরেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে চার ফুটবলার নিয়ে কাজ করেছি। ভুটানের ক্লাব পারো এফসিতে দিয়েছি সাবিনা, ঋতুপর্ণা, সুমাইয়া ও মনিকাকে। বাকি ছয়জনকে নিজ নিজ ক্লাব কর্মকর্তারা যোগাযোগ করে নিয়েছে। আমি পেপারগুলো তৈরি করতে সহযোগিতা করেছি। মূলত বড় ক্লাবগুলোকে মেয়েদের দল করাটা এবার বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে ভুটানের ফুটবল সংস্থা। আর সেখানে মেয়ে ফুটবলারের সংকট রয়েছে। প্রতিটি ক্লাবে ছয়জন বিদেশি নেওয়ার সিস্টেম আছে। যে কারণে বাংলাদেশের এত সংখ্যক ফুটবলার দেশটির লিগে খেলার সুযোগ পাচ্ছে।’
ভুটানের লিগে বাংলাদেশি মুদ্রায় মাসিক ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকায় ক্লাবগুলোর সঙ্গে চুক্তি করেছে মেয়েরা। এই অর্থের পুরোটাই যাবে সাবিনা-ঋতুদের অ্যাকাউন্টে। এজেন্ট হিসেবে যে ১০ ভাগ পাবেন নিলয়, সেটা এই অর্থের বাইরে। নারী সাফ জেতার পর এই বছরের শুরুতে ইউরোপের দেশ নর্থ মেসিডোনিয়ার ক্লাব টিভেরিজা ব্রেরার হয়ে খেলার কথা ছিল সাবিনা-ঋতুপর্ণার। সেই স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পর ভারতের লিগে খেলার সুযোগও হারায় মেয়েরা।
কেন বড় দেশগুলোর লিগে সেভাবে খেলার সুযোগ পায়নি তারা, এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন নিলয়, ‘চেষ্টা তো করা হয়। ঝামেলাটা হয় জাতীয় দলের র্যাঙ্কিং কম। কোনো দেশ যখন ফুটবলার নিতে যায়, তারা যে দেশ থেকে ফুটবলার নিবে, সে দেশের র্যাঙ্কিংটা দেখে। যখন দেখে বাংলাদেশের র্যাঙ্কিং কম, তখন তারা ভাবে ওদের থেকে আমরা র্যাঙ্কিংয়ে আগানো। আমরা কেন র্যাঙ্কিংয়ে কম থাকা দেশের প্লেয়ার আনব। আরেকটি বিষয় হলো জাতীয় দলের ম্যাচ খুবই কম। সাফের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আমাদের দেশের লিগের কাঠামো শক্তিশালী নয়। মেয়েরা লিগ খেলে নিজেদের প্রোফাইল দাঁড় করাবে, সেই মানের লিগ হয় না এখানে। এসব দুর্বলতার কারণেই বিদেশি লিগে প্লেয়ার পাঠাতে গিয়ে আমাদের ঝামেলায় পড়তে হয়।’
কে কোন ক্লাবে:
পারো এফসি: সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা ও মাতসুশিমা সুমাইয়া।
ট্রান্সফোর্ট ইউনাইটেড: মাসুরা পারভীন, কৃষ্ণা রানী সরকার ও রুপনা চাকমা।
থিম্পু সিটি: সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা ও শামসুন্নাহার সিনিয়র।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ফ টবল ফ টবল র ন ফ টবল র র
এছাড়াও পড়ুন:
সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে
১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।
নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।
এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।