সাবিনা খাতুনকে দিয়ে শুরু বিদেশি ফুটবলে বাংলাদেশের মেয়েদের পদচারণা। সংখ্যাটা এক-দুইয়ের মধ্যেই ছিল দীর্ঘদিন। গত আগস্টে এএফসি নারী চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সাবিনা খাতুন, মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্ডা ও ঋতুপর্ণা চাকমা খেলেছিলেন ভুটানের ক্লাব রয়্যাল থিম্পু এফসিতে। এতদিন সেটাই ছিল বিদেশি কোনো লিগে সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশ নারী ফুটবলারের অংশগ্রহণ। 

এবার ভুটানে আগের সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি বাংলাদেশি নারী ফুটবলার খেলছেন। নতুন আঙ্গিকে ১০ ক্লাব নিয়ে ১৯ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া ভুটান নারী ফুটবল লিগে তিন ক্লাবে বাংলাদেশের ১০ ফুটবলার চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তারা সবাই ২০২৪ সালে নেপালে নারী সাফ শিরোপা জেতা দলের সদস্য। বলা যায়, ভুটান ফুটবলে বাংলাদেশিদের চাহিদা এখন তুঙ্গে।

প্রথমে ডাক আসে চার ফুটবলারের। ফিফার এজেন্ট নিলয় বিশ্বাসের মাধ্যমে পারো এফসিতে নাম লেখান জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা, ঋতুপর্ণা, মনিকা ও মাতসুশিমা সুমাইয়া। ইতোমধ্যে তারা ভুটানে গিয়ে ক্লাবের হয়ে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন। বাকি ছয় ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তিটা সরাসরি করেছে ক্লাব। ট্রান্সফোর্ট ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় মাসুরা পারভীন, কৃষ্ণা রানী সরকার ও রুপনা চাকমা। এই ক্লাবের জার্সিতে খেলার কথা ছিল সাগরিকার। কিন্তু তাঁর বয়স আঠারোর কম হওয়ায় ভাগ্য খোলে কৃষ্ণার। সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা ও শামসুন্নাহার সিনিয়র চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন থিম্পু সিটিতে। 

দেশের নারী ফুটবলের ইতিহাসে এই প্রথম একসঙ্গে ১০ ফুটবলার বিদেশি কোনো লিগে খেলছেন। ফিফার এজেন্ট নিলয় বিশ্বাস ফুটবলার নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়া গতকাল সমকালের কাছে তুলে ধরেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে চার ফুটবলার নিয়ে কাজ করেছি। ভুটানের ক্লাব পারো এফসিতে দিয়েছি সাবিনা, ঋতুপর্ণা, সুমাইয়া ও মনিকাকে। বাকি ছয়জনকে নিজ নিজ ক্লাব কর্মকর্তারা যোগাযোগ করে নিয়েছে। আমি পেপারগুলো তৈরি করতে সহযোগিতা করেছি। মূলত বড় ক্লাবগুলোকে মেয়েদের দল করাটা এবার বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে ভুটানের ফুটবল সংস্থা। আর সেখানে মেয়ে ফুটবলারের সংকট রয়েছে। প্রতিটি ক্লাবে ছয়জন বিদেশি নেওয়ার সিস্টেম আছে। যে কারণে বাংলাদেশের এত সংখ্যক ফুটবলার দেশটির লিগে খেলার সুযোগ পাচ্ছে।’

ভুটানের লিগে বাংলাদেশি মুদ্রায় মাসিক ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকায় ক্লাবগুলোর সঙ্গে চুক্তি করেছে মেয়েরা। এই অর্থের পুরোটাই যাবে সাবিনা-ঋতুদের অ্যাকাউন্টে। এজেন্ট হিসেবে যে ১০ ভাগ পাবেন নিলয়, সেটা এই অর্থের বাইরে। নারী সাফ জেতার পর এই বছরের শুরুতে ইউরোপের দেশ নর্থ মেসিডোনিয়ার ক্লাব টিভেরিজা ব্রেরার হয়ে খেলার কথা ছিল সাবিনা-ঋতুপর্ণার। সেই স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পর ভারতের লিগে খেলার সুযোগও হারায় মেয়েরা। 

কেন বড় দেশগুলোর লিগে সেভাবে খেলার সুযোগ পায়নি তারা, এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন নিলয়, ‘চেষ্টা তো করা হয়। ঝামেলাটা হয় জাতীয় দলের র‍্যাঙ্কিং কম। কোনো দেশ যখন ফুটবলার নিতে যায়, তারা যে দেশ থেকে ফুটবলার নিবে, সে দেশের র‍্যাঙ্কিংটা দেখে। যখন দেখে বাংলাদেশের র‍্যাঙ্কিং কম, তখন তারা ভাবে ওদের থেকে আমরা র‍্যাঙ্কিংয়ে আগানো। আমরা কেন র‍্যাঙ্কিংয়ে কম থাকা দেশের প্লেয়ার আনব। আরেকটি বিষয় হলো জাতীয় দলের ম্যাচ খুবই কম। সাফের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আমাদের দেশের লিগের কাঠামো শক্তিশালী নয়। মেয়েরা লিগ খেলে নিজেদের প্রোফাইল দাঁড় করাবে, সেই মানের লিগ হয় না এখানে। এসব দুর্বলতার কারণেই বিদেশি লিগে প্লেয়ার পাঠাতে গিয়ে আমাদের ঝামেলায় পড়তে হয়।’

কে কোন ক্লাবে:
পারো এফসি: সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা ও মাতসুশিমা সুমাইয়া।
ট্রান্সফোর্ট ইউনাইটেড: মাসুরা পারভীন, কৃষ্ণা রানী সরকার ও রুপনা চাকমা।
থিম্পু সিটি: সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা ও শামসুন্নাহার সিনিয়র।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ফ টবল ফ টবল র ন ফ টবল র র

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ