‘অ্যা নাইট টু রিমেম্বার’ ও ‘অ্যান অ্যাফেয়ার টু রিমেম্বার’—দুটোই হলিউডের সিনেমা। এমিরেটস স্টেডিয়ামে গতকালের রাতটি দেখে দুটো সিনেমার নাম বারবার মনে পড়তে পারে। আর্সেনাল ভক্তদের জন্য হিরণ্ময় এক রাত, স্মরণীয় ডেকলান রাইসের জন্যও; এই রাতেই তো ফ্রি কিকের সঙ্গে তাঁর হঠাৎ পরিণয়!

কিলিয়ান এমবাপ্পের অবস্থা তখন বাংলা সিনেমার নায়ক বাপ্পারাজের মতো। ক্যারিয়ারে পাঁচ শর বেশি ম্যাচ খেলে এমবাপ্পে যে পরিণয়ের দেখা পাননি এখনো, রাইস এক রাতেই তার দেখা পেলেন কি না দুবার!

রোমান্টিক বিরহের সিনেমায় বাপ্পারাজের সামনে দিয়ে যেমন তাঁর প্রেমিকাকে অন্য নায়ক নিয়ে চলে যায়, রাইস দ্বিতীয় গোল করার পর এমবাপ্পের চোখমুখের অবস্থাও হয়েছিল তেমনই। মুখটা একবার ঝাঁকিয়ে চোখের চাহনিতে ফুটেছে বাস্তবতা মেনে নেওয়ার স্বীকৃতি। এমবাপ্পে মমতাজ শোনেননি, শুনলে নিশ্চয়ই তখন তাঁর বুকে বাজত, ‘বন্ধু যখন “‘ফ্রি কিক’” লইয়া আমার বাড়ির রাস্তা দিয়া.

..।’

আরও পড়ুন১৭ মিনিটের আর্সেনাল-ঝড়ে বিধ্বস্ত রিয়াল মাদ্রিদ, ডেকলান রাইসের ইতিহাস৮ ঘণ্টা আগে

কিন্তু এমিরেটস স্টেডিয়াম—এমবাপ্পের কিংবা রিয়ালের ঘর নয়, আর্সেনালের। রাইসও এমবাপ্পের বন্ধু নন, শত্রুও নন। তবু তাঁর মুখে অমন বিরহ দহনসূচক স্বীকৃতির রেখাচিত্র জাগার কারণ সরাসরি ফ্রি কিক থেকে রাইসের দুটো গোল।

শুধু গোল বললে অবশ্য দুটি শটের পুরো মাধুর্য বোঝানো যায় না। আন্তমহাদেশীয় ‘গাইডেড’ মিসাইল তীব্র গতিতে রংধনুর বাঁক নিয়ে লক্ষ্যে আঘাত হানলে দেখতে যেমন লাগে, রাইসের শট দুটিও তেমন। গ্যালারিতে রবার্তো কার্লোসকেও দেখা গেল। রাইসের প্রথম গোলটির পর ক্যামেরায় একবার দেখানো হলো ব্রাজিল ও রিয়াল কিংবদন্তিকে। তারপর কি কিংবদন্তি আসন ছেড়ে উঠে গিয়েছিলেন? সেটা হলেই তাঁর জন্য ভালো। রাইসের দ্বিতীয় গোলটি দেখলে যে ফ্রি কিক কিংবদন্তির বুকের ব্যথাটাই শুধু বাড়ত।

রিয়ালের বিপক্ষে খুব বেশি ফুটবলারের জীবনে এমন রাত আসেনি যে রাতের দেখা পেলেন রাইস

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এমব প প র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ