সৎমাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, মা–বাবাসহ পালিয়েছেন ছেলে
Published: 9th, April 2025 GMT
যশোরের চৌগাছায় নিজ বাড়িতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন। আজ বুধবার উপজেলার মশ্মমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দুপুরে গিয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
নিহত রিক্তা বেগম ওই গ্রামের রোকন আলীর স্ত্রী। পুলিশ জানিয়েছে, রিক্তা বেগমের ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে। সৎছেলের হাতে তিনি খুন হয়েছেন। বাবার দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে পারেননি প্রথম স্ত্রীর ছেলে বরকত আলী। ঘটনার পর থেকে বরকত ও তাঁর মা–বাবা পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছয় মাস আগে কৃষক রোকন আলীর সঙ্গে রিক্তা বেগমের বিয়ে হয়। এটা দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। আগের স্বামীর ঘরে রিক্তার একটি মেয়ে আছে। রোকন আলীর দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে পারেননি তাঁর প্রথম পক্ষের ছেলে বরকত আলী। আজ সকালে রোকন আলী খেতে কাজ করতে যান। তাঁর প্রথম স্ত্রী বাজার-সদাই করতে চৌগাছা শহরে যান। বাড়িতে ছিলেন রিক্তা ও বরকত। রিক্তা ঘরে কাজ করছিলেন। তখন বরকত পেছন থেকে তাঁর ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের কোপ দেন। বরকতকে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখেন এলাকাবাসী। প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন, ঘরের মেঝেতে রিক্তার লাশ পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, দ্বিতীয় বিয়ে করায় রোকন আলীর পরিবারে অশান্তি চলছিল। প্রথম স্ত্রীর ছেলে বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। সেই সূত্র ধরে রিক্তা বেগম হত্যা হতে পারেন। কে বা কারা তাঁকে হত্যা করেছে, তা এই মুর্হূতে বলা যাচ্ছে না। ঘটনার তদন্ত চলছে। রিক্তা বেগম খুন হওয়ার পর থেকে তাঁর স্বামী রোকন আলী, তাঁর প্রথম স্ত্রী ও ছেলে বরকত পলাতক। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম স ত র
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।