বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে দারুণ এক জয় তুলে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বার্সেলোনা। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে জার্মান ক্লাবটিকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে কাতালানরা। ম্যাচে জোড়া গোল করে নিজের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে জ্বলে উঠেছেন রবার্ট লেভান্ডোভস্কি।

ট্রেবলের খোঁজে থাকা বার্সেলোনা ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে। ২৫ মিনিটে রাফিনহার নেওয়া শটে এগিয়ে যায় তারা। প্রথমার্ধে আরও কিছু সুযোগ পেলেও ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেলের দৃঢ়তায় ব্যবধান বাড়াতে পারেনি বার্সা। বিরতির পর আরও শক্তিশালী হয়ে নামে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। দ্বিতীয়ার্ধে তৃতীয় মিনিটেই রাফিনহার পাস থেকে জালে বল পাঠান লেভান্ডোভস্কি। এরপর ৬৬ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন এই পোলিশ ফরোয়ার্ড। ৭৭ মিনিটে বার্সেলোনার হয়ে চতুর্থ ও শেষ গোলটি করেন তরুণ প্রতিভা লামিনে ইয়ামাল। 

এই জয়ে ২০১৯ সালের পর প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠার দ্বারপ্রান্তে বার্সেলোনা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ২৩ ম্যাচে অপরাজিত রইলো তারা। পাঁচবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা সর্বশেষ ট্রফি জিতেছিল ২০১৫ সালে।

ম্যাচ শেষে বার্সা ফরোয়ার্ড লেভান্ডোভস্কি বলেন, ‘আমরা দারুণ খেলেছি। তবে এখনো এক ম্যাচ বাকি। আমরা সবসময় বার্সেলোনার মতো ফুটবল খেলতে চাই। জার্মানিতেও একইভাবে খেলেই জিততে চাই।’

তবে সতর্কতা রাখতে বলছেন কোচ হ্যান্সি ফ্লিক। তিনি জানান, ‘ফুটবল এক অদ্ভুত খেলা। আজ যেমন খেলেছি, ঠিক তেমনি মনোযোগ ধরে রাখতেই হবে পরের লেগেও।’ 

সেমিফাইনালে পৌঁছাতে বার্সাকে এখন শুধু দ্বিতীয় লেগে হার এড়াতে হবে। সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ—ইন্টার মিলান কিংবা বায়ার্ন মিউনিখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ