ডর্টমুন্ডকে একহালি দিয়ে সেমির দুয়ারে বার্সেলোনা
Published: 10th, April 2025 GMT
বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে দারুণ এক জয় তুলে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বার্সেলোনা। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে জার্মান ক্লাবটিকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে কাতালানরা। ম্যাচে জোড়া গোল করে নিজের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে জ্বলে উঠেছেন রবার্ট লেভান্ডোভস্কি।
ট্রেবলের খোঁজে থাকা বার্সেলোনা ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে। ২৫ মিনিটে রাফিনহার নেওয়া শটে এগিয়ে যায় তারা। প্রথমার্ধে আরও কিছু সুযোগ পেলেও ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেলের দৃঢ়তায় ব্যবধান বাড়াতে পারেনি বার্সা। বিরতির পর আরও শক্তিশালী হয়ে নামে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। দ্বিতীয়ার্ধে তৃতীয় মিনিটেই রাফিনহার পাস থেকে জালে বল পাঠান লেভান্ডোভস্কি। এরপর ৬৬ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন এই পোলিশ ফরোয়ার্ড। ৭৭ মিনিটে বার্সেলোনার হয়ে চতুর্থ ও শেষ গোলটি করেন তরুণ প্রতিভা লামিনে ইয়ামাল।
এই জয়ে ২০১৯ সালের পর প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠার দ্বারপ্রান্তে বার্সেলোনা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ২৩ ম্যাচে অপরাজিত রইলো তারা। পাঁচবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা সর্বশেষ ট্রফি জিতেছিল ২০১৫ সালে।
ম্যাচ শেষে বার্সা ফরোয়ার্ড লেভান্ডোভস্কি বলেন, ‘আমরা দারুণ খেলেছি। তবে এখনো এক ম্যাচ বাকি। আমরা সবসময় বার্সেলোনার মতো ফুটবল খেলতে চাই। জার্মানিতেও একইভাবে খেলেই জিততে চাই।’
তবে সতর্কতা রাখতে বলছেন কোচ হ্যান্সি ফ্লিক। তিনি জানান, ‘ফুটবল এক অদ্ভুত খেলা। আজ যেমন খেলেছি, ঠিক তেমনি মনোযোগ ধরে রাখতেই হবে পরের লেগেও।’
সেমিফাইনালে পৌঁছাতে বার্সাকে এখন শুধু দ্বিতীয় লেগে হার এড়াতে হবে। সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ—ইন্টার মিলান কিংবা বায়ার্ন মিউনিখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে ভাই-ভাবি-ভাতিজার হামলায় আহত হয়ে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মনির হোসেন উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি ছেলে আছে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার (৫৫) স্ত্রী জুবায়দা বেগম (৪৫) একটি মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া বসতঘরে প্রবেশ করলে মনির আপত্তি জানান। এতে বাবুলের স্ত্রী উচ্চস্বরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মনির প্রতিবাদ করলে বাবুল মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৫) এগিয়ে এসে চাচা মনিরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাওন দা নিয়ে মনিরকে মারতে এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় বড় ভাই বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৩) ও ছেলে ইমন (২৬) এবং শাওন লাঠি ও কাঠ দিয়ে মনিরকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইট দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মনিরের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সাতটার দিকে ইসিজি পরীক্ষায় কোনো স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।’
নিহত ব্যক্তির স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘বসতঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকবক করছিলেন। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে। স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে, “ওরে ধর বেশি করে বাইরা।” তখন বাকিরা লাঠি, কাঠ ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও স্বামীকে মারতে এসেছিল।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটির চুলার ধোঁয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি। নিরীহ ছেলেটাকে একা পেয়ে তারা সবাই মারধর করে মেরে ফেলেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাবুল মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা-পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম রকীব উর রাজা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সদর থানার কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।