যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ মানুষ ইসরায়েলকে পছন্দ করেন না: জরিপ
Published: 10th, April 2025 GMT
ইসরায়েলকে নিয়ে বর্তমানে অধিকাংশ মার্কিন নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। সম্প্রতি পিউ রিসার্চের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত পিউ রিসার্চের ওই জরিপে দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ মার্কিন এখন ইসরায়েলের বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। ২০২২ সালের মার্চে করা এক জরিপে এ হার ছিল ৪২ শতাংশ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ওই দিনই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে ইসরায়েল। দেশটির সেই আক্রমণ গাজা যুদ্ধে রূপ নিয়েছে, যা চলছে এখনো।
যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত রিপাবলিকানদের তুলনায় ডেমোক্র্যাটরা ইসরায়েলের প্রতি বেশি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে থাকেন। সর্বশেষ জরিপে ৬৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ও ৩৭ শতাংশ রিপাবলিকান ইসরায়েলকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেছেন। গাজা যুদ্ধ শুরুর আগে ২০২২ সালে ২৭ শতাংশ রিপাবলিকান ইসরায়েলের বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব রাখতেন।যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত রিপাবলিকানদের তুলনায় ডেমোক্র্যাটরা ইসরায়েলের প্রতি বেশি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে থাকেন। সর্বশেষ জরিপে ৬৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ও ৩৭ শতাংশ রিপাবলিকান ইসরায়েলকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেছেন। গাজা যুদ্ধ শুরুর আগে ২০২২ সালে ২৭ শতাংশ রিপাবলিকান ইসরায়েলের বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব রাখতেন।
তুলনামূলক কমবয়সী রিপাবলিকান, যাঁদের বয়স ৫০ বছরের নিচে, বিশেষ করে তাঁদের মধ্যে ইসরায়েলকে অপছন্দ করার হার বেড়েছে। এ বয়সের প্রায় ৫০ শতাংশ রিপাবলিকান এবার ইসরায়েলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
ডেমোক্র্যাটদের মধ্যেও ইসরায়েলকে নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বেড়েছে। এবারের জরিপে অংশ নেওয়া ৬৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ইসরায়েলের বিষয়ে নেতিবাচক কথা বলেছেন, যা ২০২২ সালের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে শুধু ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সী রিপাবলিকান গ্রুপ ছাড়া বাকি সব ধরনের বয়স গ্রুপের মানুষ মনে করেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলা তাদের ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গত কয়েক বছরে মার্কিন ইহুদিদের সঙ্গে ইসরায়েলের দূরত্ব বেড়েছে। বিশেষ করে ইসরায়েল সরকার ও দেশটির সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ দূরত্ব আরও দ্রুত বেড়েছে।
যদিও অন্তত ৭৩ শতাংশ মার্কিন ইহুদি এখনো ইসরায়েলের পক্ষে ইতিবাচক মনোভাব ধারণ করেন। তাঁদের পর শ্বেতাঙ্গ ধর্মপ্রচারকদের মধ্যে ইসরায়েলের পক্ষে ইতিবাচক মনোভাব বেশি, যা প্রায় ৭২ শতাংশ।
তবে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, শ্বেতাঙ্গ প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক উভয় দলের মানুষের মধ্যে ইসরায়েলের বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব বেড়েছে। এ হার যথাক্রমে ৫০ শতাংশ ও ৫৩ শতাংশ।
মুসলিম মার্কিনদের মধ্যে ৮১ শতাংশ ইসরায়েলের বিপক্ষে ও ১৯ শতাংশ পক্ষে মত দিয়েছেন।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ওয়াশিংটন সফরে যান। এর আগে পিউ রিসার্চের এ জরিপ পরিচালিত হয়। সফরে হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুনট্রাম্পকে ইসরায়েল ও ইহুদিদের ‘অসাধারণ বন্ধু’ বললেন নেতানিয়াহু০৭ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র প ২০২২ স ল
এছাড়াও পড়ুন:
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মিনহাজ মান্নান
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বর্তমান পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমনের আপিল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
এ রায়ের ফলে ওই মামলা থেকে মিনহাজ মান্নান অব্যাহতি পেলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মঈন ফিরোজী।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ওই মামলায় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নান ইমনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। পলাতক অপর চার আসামি হলেন সুইডেনপ্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরিপ্রবাসী সামিউল ইসলাম খান ওরফে স্যাম ওরফে জুলকার নাইন, আশিক ইমরান ও ওয়াহিদুন নবী।
দিদারুল ইসলাম ও মিনহাজ মান্নান নারাজি আবেদন দিলে তা নামঞ্জুর হয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে মিনহাজ মান্নান একই বছর হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মিনহাজ মান্নানের ক্ষেত্রে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। শুনানি শেষে আপিল মঞ্জুর করে আজ রায় দেওয়া হয়।
আদালতে মিনহাজ মান্নানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৫ মে মামলাটি করা হয়। ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। এতে কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ ও রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ইসলামকে আসামি করা হয় এবং আটজনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন১০ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন কার্টুনিস্ট কিশোর০৪ মার্চ ২০২১এ মামলায় কারাবন্দী মুশতাক আহমেদ ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মারা যান। এ কারণে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, অভিযোগ গঠনের সময় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির ছিলেন দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান। তাঁরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। সেদিন কার্টুনিস্ট কিশোর আদালতে হাজির না থাকায় তাঁর জামিন বাতিল করা হয়।
আরও পড়ুনআজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত লেখক মুশতাক২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১