ফেনীতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিনে এক পরীক্ষার্থীকে লিখিত উত্তরপত্র সরবরাহের দায়ে এক হল পর্যবেক্ষককে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। দণ্ডপ্রাপ্ত শিক্ষকের নার মো. ইউনুস।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনী আলিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষা চলার সময় এ ঘটনা ঘটে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা নাসরিন ওই শিক্ষককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শিক্ষক মো.

ইউনুস ফেনী সদর উপজেলার মোটবী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক।

আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ইকবাল হোসেন জানান, আজ দাখিল পরীক্ষার প্রথম দিন ‘কোরআন তাজবিদ’ বিষয়ের পরীক্ষা চলছিল। এ সময় শিক্ষক মো. ইউনুস এক পরীক্ষার্থীকে লিখিত উত্তরপত্র সরবরাহ করেন। একপর্যায়ে হল পরিদর্শনকালে বিষয়টি কেন্দ্রের ট্যাগ অফিসার ও ফেনী সদর উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা রাশেদুল আলম হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নজরে আনলে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। ওই পরীক্ষার্থীকেও পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক, কেন্দ্রের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন প্রথম আলোকে বলেন , ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে খাতায় লিখে পরীক্ষার্থীকে উত্তর সরবরাহ করার সত্যতা মিলেছে। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই শিক্ষককে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি পরীক্ষার্থীকেও উক্ত পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র থ ক সদর উপজ ল দ ই বছর র র সরবর হ ক ষকক

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার বসার দাবি উচ্ছেদ হওয়া হকারদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা থেকে সম্প্রতি উচ্ছেদের শিকার হকাররা আবারও আগের জায়গায় বসার দাবি জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগে বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন ভবনের ২ নম্বর কক্ষে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ ও ভুক্তভোগী হকারদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মাশরুমচাষি ও ক্যাম্পাসে হকারদের কাছে মাশরুম সরবরাহকারী রুবি আক্তার। সঞ্চালনা করেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন ঢাকা জেলার আহ্বায়ক শবনম হাফিজ। এতে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম, ঢাকা জেলা কমিটির সদস্য ইকবাল কবির ও আঁখি মনি এবং ভাসমান উদ্যোক্তা নুরুজ্জামান কমলসহ উচ্ছেদের শিকার কয়েকজন হকার।

মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন শবনম হাফিজ। তিনি বলেন, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক হকার কাজ করতেন। গত অক্টোবরে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগ এনে ডাকসুর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। এতে অসংখ্য হকার বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে পড়েছেন।

শবনম হাফিজ আরও বলেন, এই মানুষগুলোকে উচ্ছেদের নামে হয়রানি করা হলো, জিনিসপত্র নষ্ট করা হলো। এই ক্ষতির জবাবদিহি চাই, ক্ষতিপূরণ চাই এবং তাঁদের যেন সসম্মানে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়, সেটি চাই। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ যেন তাঁদের পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করে দেয়।

আয়োজকেরা বলেন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন ও ভুক্তভোগী হকাররা উচ্ছেদের পর নিজেদের কার কী পরিস্থিতি ও কীভাবে তাঁদের বর্তমান জীবন চলছে, তা জানতে একটি জরিপ পরিচালনা করছেন। এর আওতায় এ পর্যন্ত তাঁরা ৫০ জনের বিস্তারিত সাক্ষাৎকার নিতে পেরেছেন। এর মধ্য দিয়ে যে চিত্র বেরিয়ে এসেছে, তা তুলে ধরার লক্ষ্যেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে রুবি আক্তার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির সময় স্বামীর গাড়ি ভাড়ার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে তাঁরা মাশরুম চাষ শুরু করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চাহিদার ওপরই নির্ভর ছিল তাঁদের সংসার। হকার উচ্ছেদের পর সেই বাজার প্রায় হারিয়ে গেছে।

রুবি আক্তার বলেন, ‘একজন হকারের সঙ্গে আরও অনেকের আয় জড়িয়ে থাকে—সরবরাহকারী, পানিওয়ালা ও সবজিওয়ালা। একজনের আয় বন্ধ হলে বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা চাই, হকারদের কাজের জায়গা আবারও ফিরিয়ে দেওয়া হোক, বসতে দেওয়া হোক আগের জায়গায়। তাতে আরও অনেক পরিবার বেঁচে যাবে।’

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, হকার উচ্ছেদ ডাকসুর দায়িত্ব নয়। এটি মানবিক বা ন্যায়সংগত কোনো পদক্ষেপ নয়। হকারদের সম্মানজনক ব্যবসার ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। এ বিষয়ে যথাযথ পরিকল্পনা করা সম্ভব।

ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম বলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা অন্যায় ও অমানবিক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও কয়েকজন হকার নিজেদের বর্তমান সংকটের কথা জানান।

চার দফা সুপারিশ

অনুষ্ঠানে আয়োজকেরা চার দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো উচ্ছেদ করা হকারদের আগের কাজের জায়গায় ফেরার সুযোগ দেওয়া; কিছুদিন পরপর উচ্ছেদের নামে হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করা এবং যাঁরা এই নির্যাতন করেছেন, তাঁদের বিচার করা; প্রয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা সিটি করপোরেশন বা নিজেদের সমবায় বা ট্রেড ইউনিয়নের পরিচয়পত্র ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা এবং কয়েক দফায় ভাসমান উদ্যোক্তাদের হাঁড়িপাতিল ও অন্যান্য যে মালামাল প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে গেছে, তা দ্রুত ফেরত দিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেপিএমে চার দিন বাদে ফের ‌‘ব্যালটের কাগজ’ ছাপা শুরু
  • প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ পরীক্ষার সূচি প্রকাশ
  • নতুন মাদক এমডিএমবি জব্দ, চক্রের হোতাসহ গ্রেপ্তার ৪
  • কমেছে সবজির দাম, বেড়েছে মাছের দাম
  • বাজারে বাড়তি পেঁয়াজ ও সয়াবিন তেলের দাম
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার বসার দাবি উচ্ছেদ হওয়া হকারদের
  • কম্পিউটার বাজারে র‍্যামের সরবরাহে ঘাটতি