ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত ও নিয়ন্ত্রণে আনতে নতুন নিয়ম চালু করেছে খুদে ব্লগ লেখার ওয়েবসাইট এক্স (সাবেক টুইটার)। নতুন নিয়মের আওতায় যেসব অ্যাকাউন্ট অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে পরিচালিত হচ্ছে, সেসব অ্যাকাউন্টে নামের শুরুতেই স্পষ্টভাবে ‘ফেক’ বা ‘প্যারোডি’ শব্দ যুক্ত করতে হবে। শুধু নামই নয়, প্রোফাইল ছবিতেও থাকতে হবে স্বাতন্ত্র্য। মূল বা আসল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ছবির মিল থাকলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

এক্স জানিয়েছে, নতুন নিয়মের উদ্দেশ্য হলো প্ল্যাটফর্মে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্তির ঝুঁকি কমানো। প্যারোডি, ফ্যান ও কমেন্টারি অ্যাকাউন্টগুলো যে আসল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত নয়, তা সহজে বুঝতে ব্যবহারকারীদের সহায়তা করবে এই পরিবর্তন।

এক্সে থাকা বিভ্রান্তিকর প্যারোডি অ্যাকাউন্ট নিয়ে ব্যবহারকারীদের অভিযোগের শেষ নেই। বিশেষ করে ইলন মাস্ককে ঘিরে তৈরি হওয়া বিভিন্ন ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীদের প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত করে চলেছে। অনেক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, নিয়মিতভাবে ভুয়া ইলন মাস্কের অ্যাকাউন্ট থেকে বার্তা পান তাঁরা। এ সমস্যা সমাধানে গত জানুয়ারি মাসে প্যারোডি অ্যাকাউন্ট শনাক্তে বিশেষ ‘লেবেল’ চালু করে এক্স। তবে এর মাধ্যমে প্যারোডি অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হওয়ায় এবার নতুন নিয়ম চালু করেছে খুদে ব্লগ লেখার ওয়েবসাইটটি।

সম্প্রতি ১০ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে এমন একটি প্যারোডি অ্যাকাউন্ট এক পোস্টে এক্স ব্যবহারকারীদের টেসলা গাড়ি উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। পোস্টটিতে প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার লাইক এবং ২ লাখের বেশি মন্তব্য জমা হয়। এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, এসব অ্যাকাউন্ট ঠিক কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।

সূত্র: বিবিসি

আরও পড়ুনইলন মাস্কের এক্সে চাকরির সুযোগ, লাগবে না সনদ বা অভিজ্ঞতা২০ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ