নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাতে অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে শিবপুর উপজেলার এক গ্রামে ১২ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বুধবার (৯ এপ্রিল) কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কুমিল্লায় তার মেয়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ওই কিশোরী স্থানীয় মহিলা মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঈদের ছুটিতে মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় সে বাড়িতে অবস্থান করছিল। মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ির পাশে একটি গাছ থেকে আম পেড়ে আনতে গেলে প্রতিবেশী সেই ব্যক্তি কিশোরীর মুখ চেপে ধরে পাশের ধানক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় কিশোরীর চাচি গিয়ে দেখে ফেললে অভিযুক্ত দৌড়ে পালিয়ে যায়।

শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসাইন বলেছেন, ভুক্তভোগীর বাবা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

ঢাকা/হৃদয়/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমি এতিম হয়ে গেলাম রে’

“আমি এতিম হয়ে গেলাম রে, আমার বাবা আর নেই, আমি এখন কী করবো ফুফু”- এভাবেই হাহাকার করছিলেন পাপিয়া আক্তার। বাবা হারানোর শোকে কণ্ঠ যেন পাথর ভেদ করা আর্তনাদ। পাশে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছেন স্বজনরা। সবাই জানে, এই কান্নার আর কোনো সান্ত্বনা নেই।

পাপিয়া মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া এলাকায় হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া চালক পারভেজ খানের (৪৫) মেয়ে। তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন পারভেজ খান। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আরো পড়ুন:

স্কুল পরিচালকের বিরুদ্ধে ৮ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ 

শ্রেণিকক্ষে টিকটক বানানোয় ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) গভীর রাতে ফলসাটিয়া বাজারের পাশে থেমে থাকা স্কুল বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বাসে ওই সময় ঘুমিয়ে ছিলেন চালক পারভেজ খান। আগুনে বাসটি মুহূর্তেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তিনদিন ধরে ৭০ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে বাঁচার লড়াই চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু জীবন তাকে আর সময় দেয়নি।

নিহত পারভেজ খান সদর উপজেলার বারাইভিকড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তার ঘরে রয়েছে স্ত্রী, এক স্কুলপড়ুয়া ছেলে এবং ছোট মেয়ে পাপিয়া আক্তার। 

স্ত্রী চোখে মুখে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “স্বামীকে হারিয়ে আমরা পথে বসে গেলাম। এখন সন্তানদের কীভাবে মানুষ করবো? কে চালাবে সংসার?”

স্থানীয়রা জানান, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। যারা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পারভেজের পরিবার যেন রাষ্ট্রীয় সাহায্য পায়, সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসারের ব্যয় চালাতে যেন সরকার ও প্রশাসন এগিয়ে আসে।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, “গত বৃহস্পতিবার স্কুলবাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। এতে দগ্ধ হন বাসটির ভেতর ঘুমিয়ে থাকা চালক পারভেজ। পুলিশ উদ্ধার করে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাকে। স্কুলবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ