পদোন্নতি-নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ, আজ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের মানববন্ধন
Published: 17th, November 2025 GMT
বাংলাদেশ ব্যাংকের পদোন্নতি ও নিয়োগপ্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে স্থবিরতা বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে কর্মপরিবেশ নিয়েও নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটিতে বেতন বৈষম্য হ্রাস ও বাইরে থেকে উপদেষ্টা ও পরামর্শক নিয়োগ বন্ধ করাসহ মোট ১০ দফা দাবিতে গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল’। কর্মকর্তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, পেশাগত সুরক্ষা ও বিদ্যমান বৈষম্য দূর করতে এই দাবিগুলো তোলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এসব দাবির সমর্থনে আজ সোমবার একটি মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কর্মকর্তাদের একটি অংশ। মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণাকারী এই অংশটি বিএনপি-সমর্থিত হিসেবে পরিচিত।
১০ দফা দাবির মূল বিষয়বস্তুবাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের সভাপতি এ কে এম মাসুম বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা শ্রাবণ ৫ নভেম্বর গভর্নরকে একটিচিঠি দেন। এতে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে।
পদোন্নতি ও নিয়োগে স্থবিরতা: বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রথম শ্রেণির মোট ৬ হাজার ২৬০টি পদের মধ্যে বর্তমানে ১ হাজার ৯৩৬টি পদ শূন্য। পাশাপাশি সর্বোচ্চ পদ নির্বাহী পরিচালকের ৪টি পদও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। এ কারণে কর্মকর্তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। সে আলোকে শূন্য পদগুলোর বিপরীতে দ্রুত নিয়োগ, প্যানেল তৈরি ও পদোন্নতির প্রক্রিয়া চালু করার দাবি জানানো হয়েছে চিঠিতে।
কর্মপরিবেশ ও প্রশাসনের দূরত্ব: চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ফ্লোরে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ তালাবদ্ধ করে রাখা হচ্ছে এবং যাতায়াত কেবল লিফটে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে, যা ‘নজিরবিহীন’। কর্মকর্তারা মনে করছেন, এতে প্রশাসন ও কর্মকর্তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে এবং একধরনের ‘ভীতি ও অস্বস্তিকর পরিবেশ’ তৈরি হয়েছে।
উপদেষ্টা নিয়োগে আপত্তি: চিঠিতে বাইরে থেকে উপদেষ্টা ও পরামর্শক নিয়োগের বিরোধিতা করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের অভিযোগ, এসব ব্যক্তির আচরণ ব্যাংকের কর্মপরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। চিঠিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক কর্মকর্তাদের হয়রানির শিকার হওয়ার প্রবণতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও যুগ্ম পরিচালক পর্যায়ে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা চালু করার দাবি তোলা হয়েছে। এ ছাড়া জব্দ করে রাখা কর্মকর্তাদের ব্যবহৃত লকার দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া, নতুন পদোন্নতি নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে অফিস শৃঙ্খলার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা এবং অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের সঙ্গে প্রতি ছয় মাসে একবার আলোচনায় বসা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান গভর্নরের যোগদানের পর এক বছরের বেশি সময় পার হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং সেবার মানোন্নয়নে বা কর্মপরিবেশের উন্নয়নে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সংক্ষুব্ধ করেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত দ র পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল
সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে গোপনে বিক্রির ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবীতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান–সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া, সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম এবং একাধিক অভিযোগের মুখে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ইউনিয়নকে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে মাসুম ও মনিরুজ্জামান নিজেদের ইচ্ছেমতো সব কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
তাদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়। পরে এলাকাবাসী মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু এখন উল্টো ভালো মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ মোল্লা বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরি করে বিক্রি করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
স্কুলের মতো পবিত্র জায়গায় দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসী রাতেই মালামাল আটকে দিয়ে প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে।”
এলাকাবাসীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও পরিচালনা কমিটিতে সৎ-নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম জানান, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবে আমাদের বিতর্কিত করতে বিক্রি করা মালামাল চুরির ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গতকাল মিটিং করেছি৷
অভিযুক্ত বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া জানান, আমরা স্কুলের একটি কমিটি করে বিক্রি করেছি। তবেমাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেই নি। বিক্রি করার পর গাড়িতে উঠাতে রাত হয়ে যায়। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটে নি।
উল্লেখ্য, গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের নির্দেশে রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চমীঘাট স্কুলের মালামাল বিক্রি করা হয়। যা স্থানীয় এক ভাঙ্গারীর পিক-আপ ভ্যানে নেয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।