Prothomalo:
2025-11-17@05:12:33 GMT

দেশে প্রজনন হার হঠাৎ বাড়ছে

Published: 17th, November 2025 GMT

বাংলাদেশ কি উল্টো পথে হাঁটছে? দেশের নারীদের মোট প্রজনন হার বা টোটাল ফার্টিলিটি রেট (টিএফআর) এখন ২ দশমিক ৪। বাংলাদেশ অনেক চেষ্টা করে প্রজনন হার কমিয়ে ২ দশমিক ১৭ করতে পেরেছিল। এখন আবার তা বাড়তে শুরু করেছে। স্বাধীনতার পর ৫৪ বছরে এই উল্টো যাত্রা আগে কখনো দেখা যায়নি।

একজন নারী তাঁর প্রজনন বয়সে (১৫ থেকে ৪৯ বছর) যত সন্তানের জন্ম দেন, সেটাকে বলা হয় মোট প্রজনন। স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশের নারীরা গড়ে ছয়টি বা তার বেশি সন্তানের জন্ম দিতেন। পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশ টিএফআর কমানোর চেষ্টা করেছে। অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের বড় অর্জনের একটি এই জন্মহার কমানো।

গতকাল রোববার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং ইউনিসেফ যৌথভাবে মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (মিকস) ২০২৫ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ময়মনসিংহ বিভাগে প্রজনন হার সবচেয়ে বেশি, ২ দশমিক ৮। সবচেয়ে কম রাজশাহী বিভাগে, ২ দশমিক ২। সবচেয়ে দরিদ্র পরিবারের নারীদের মধ্যে এবং কম শিক্ষিত বা নিরক্ষর নারীদের মধ্যে টিএফআর বেশি।

টিএফআর বাড়ছে, এর অর্থ আমাদের পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম ঠিকভাবে চলছে না। এটা দেখে মনে হচ্ছে আমাদের জনসংখ্যাবিষয়ক নীতি ও কর্মকৌশল সঠিক পথে নেই। এমনিতেই দেশে বেকারত্ব বেশি। টিএফআর বৃদ্ধি দেশের সার্বিক উন্নয়নকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারেজনসংখ্যাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে টিএফআর ছিল ৬ বা তার বেশি। মিকস ও অন্যান্য উৎসের তথ্য ব্যবহার করে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮২ সালে টিএফআর ছিল ৫ দশমিক শূন্য ৭। এরপর তা কমতে থাকে। ১৯৯৪ সালে টিএফআর কমে হয় ৩ দশমিক ৪। টিএফআর আরও কমতে থাকে, ২০০৪ সালে তা কমে হয় ৩। ২০১২ সালে ছিল ২ দশমিক ৩ এবং ২০২২ সালেও একই হার। ২০২৪ সালের দিকে তা ছিল ২ দশমিক ১৭ বা তার কাছাকাছি।

পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে টিএফআর কখনো কমতে দেখা যায় না। হয় ক্রমাগত কমেছে, না হয় কয়েক বছর ধরে স্থির অবস্থায় ছিল। যেমন ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত টিএফআর ৩ দশমিক ৩ ছিল। আবার ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত টিএফআর ২ দশমিক ৩ ছিল। অর্থাৎ এক দশক ধরে টিএফআর স্থির ছিল। টিএফআর কেন কমছে না, তা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে।

টিএফআর কীভাবে কমেছিল

স্বাধীনতার পর জনসংখ্যাকে বাংলাদেশের জাতীয় সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। ভাবা হয়েছিল অধিক জনসংখ্যা জাতীয় অর্থনীতির বাধা। সরকার জনসংখ্যা কমানোর নীতি গ্রহণ করে। পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির ওপর জোর দেওয়া হয়। মানুষের হাতের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কর্মকৌশল দেওয়া হয়। পাশাপাশি ব্যাপক জনসচেতনতা কর্মকাণ্ড চালু করা হয়। রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিভিশন ও বেতার এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে। পরিবার পরিকল্পনা মাঠকর্মী ছাড়াও এনজিওরা এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে।

গত কয়েক দশকে সক্ষম দম্পতিদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার বেড়েছে। মানুষ সহজে হাতের কাছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা দোকান থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী কিনতে পারে। এর পাশাপাশি নারী শিক্ষার হার বেড়েছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। এসব উপাদানও টিএফআর কমাতে সহায়তা করেছে।

১৯৯৬ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত টিএফআর ৩ দশমিক ৩ ছিল। আবার ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত টিএফআর ২ দশমিক ৩ ছিল। অর্থাৎ এক দশক ধরে টিএফআর স্থির ছিল। টিএফআর কেন কমছে না, তা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে।

বাংলাদেশের উদ্দেশ্য ছিল টিএফআর ২ দশমিক ১–এ নিয়ে যাওয়া; তা হয়নি। টিএফআর বেড়ে যাওয়ার অর্থ জনসংখ্যার চাপ বেড়ে যাওয়া। বাংলাদেশ এমনিতেই জনবহুল দেশ। তারপরও জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি বেড়ে গেলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ঝুঁকি আছে অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ নানা ক্ষেত্রে।

জনসংখ্যাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিএফআর বাড়ছে, এর অর্থ আমাদের পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম ঠিকভাবে চলছে না। এটা দেখে মনে হচ্ছে আমাদের জনসংখ্যাবিষয়ক নীতি ও কর্মকৌশল সঠিক পথে নেই। এমনিতেই দেশে বেকারত্ব বেশি। টিএফআর বৃদ্ধি দেশের সার্বিক উন্নয়নকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দশম ক ৩ ছ ল প রজনন হ র স ব ধ নত র র জনস খ য জনস খ য ব ২ দশম ক আম দ র র পর ব

এছাড়াও পড়ুন:

রুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা ২৩ জানুয়ারি, এবার পরীক্ষা কেন্দ্র ২টি, ২০২২ সালের এসএসসি পাসেও আবেদন

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এবারই প্রথম শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে রুয়েট ক্যাম্পাসের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ক্যাম্পাসেও পরীক্ষা কেন্দ্র রাখা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রেই অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে।

আজ রোববার রুয়েটের বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫৪তম জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এমসিকিউ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠেয় এই ভর্তি পরীক্ষায় ১২ শতাধিক আসনের বিপরীতে ১৯ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।

আরও পড়ুনএইচএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণ, ঢাকা বোর্ডের নতুন জিপিএ–৫ পেলেন ২০১ পরীক্ষার্থী৪ ঘণ্টা আগেআবেদনের যোগ্যতা

ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতাও নির্ধারণ করা হয়েছে। আবেদনকারীকে ২০২২ বা ২০২৩ সালের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ-৪.০০ এবং ২০২৫ সালে অনুষ্ঠেয় উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫.০০ পেতে হবে। পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন—এই তিন বিষয়ে মোট জিপিএ ১৪ থাকতে হবে।

ও এবং এ লেভেল পাস করা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ও লেভেল পরীক্ষায় কমপক্ষে পাঁচটি বিষয়ে ন্যূনতম বি গ্রেড এবং এ লেভেল পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে আলাদাভাবে বি গ্রেড পেতে হবে। আবেদনকারীর এ লেভেল সনদ অবশ্যই ২০২৪ সালের নভেম্বর বা তার পরের হতে হবে।

আরও পড়ুনজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, আবেদন শুরু ২৩ নভেম্বর১৩ নভেম্বর ২০২৫

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ভর্তি পরীক্ষা–সংক্রান্ত অন্যান্য সিদ্ধান্ত ভর্তি পরীক্ষার জন্য গঠিত স্টিয়ারিং কমিটির সভায় গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুনহাজী দানেশের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি, ১৭৯৫ আসনের আবেদন শুরু ১৬ নভেম্বর১৩ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টানা তৃতীয়বার বিশ্বকাপ না খেলার শঙ্কায় ইতালি, ২৮ বছর পর নরওয়েকে বিশ্বকাপে ফেরালেন হলান্ড
  • দুই আসামিকে খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেল রাষ্ট্রপক্ষ
  • আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না: এসএস রাজামৌলি
  • রুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা ২৩ জানুয়ারি, এবার পরীক্ষা কেন্দ্র ২টি, ২০২২ সালের এসএসসি পাসেও আবেদন
  • বাবরের সেঞ্চুরি ৮৩ ইনিংস ও ৮০৭ দিন পর, অনুরোধ করে রেখে শ্রীলঙ্কাকে হারাল পাকিস্তান
  • ঝিনাইদহ ২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন নাসের জাহেদী