২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষি গুচ্ছভুক্ত ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা আগামী শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ৪ হাজার পরীক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত নিরাপত্তা সভায় এসব তথ্য জানান ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.

কাজী রফিকুল ইসলাম।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এসএম হেমায়েত জাহান, সভাপতিত্ব করেন প্রক্টর প্রফেসর আবুল বাশার। 

এতে বক্তব্য রাখেন ভাষা ও যোগাযোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুলতানা জাহান, নিরাপত্তা কর্মকর্তা মুকিত মিয়াসহ অন্যান্যরা।

ভর্তি পরীক্ষা ঘিরে নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পাঁচটি হেল্প ডেস্ক, ওয়াশরুম, মেডিকেল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হবে।

ভাইস চ্যান্সেলর জানান, পরীক্ষার দিন দুপুর ১২টার মধ্যেই ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হবে এবং আগের রাত থেকেই বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। চার স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আনসার, পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি আরও বলেন, ভর্তি পরীক্ষা একটি বড় আয়োজন। এককভাবে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিএনসিসি, রোভার স্কাউটস এবং বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল টিমের সমন্বয়ে আমরা কাজ করছি।

এদিকে ঢাকায় একই দিনে ‘মার্চ টু গাজা’ কর্মসূচির কারণে যানজটের আশঙ্কা থাকায় পরীক্ষার্থীদের কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে পৌঁছাতে অনুরোধ করা হয়েছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে সকাল ৮টার পর থেকে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের অভিমুখী সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। শুধু পরীক্ষাসংক্রান্ত যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

জালিয়াতি রোধে নেওয়া হয়েছে কঠোর পদক্ষেপ। প্রশ্নপত্র বিতরণে জিপিএস ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, যাতে নির্ধারিত কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রে প্রশ্ন সঠিকভাবে পৌঁছানো নিশ্চিত করা যায়। পরীক্ষার্থীদের প্রবেশের আগে সম্পূর্ণ দেহ তল্লাশি করা হবে এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইস বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।

এবার কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসন সংখ্যা ৩ হাজার ৮৬৩টি, যার মধ্যে পবিপ্রবিতে রয়েছে ৪২৩টি। আবেদন করেছেন মোট ৯৪ হাজার ২০ জন শিক্ষার্থী—ছাত্র ৪৬ হাজার ৯৩২ এবং ছাত্রী ৪৭ হাজার ৮৮ জন। গড়ে প্রতিটি আসনের জন্য প্রতিযোগিতা করছেন প্রায় ২৫ জন। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৯টি কেন্দ্রে ও ১৩টি উপকেন্দ্রে। সম্ভাব্য ফল প্রকাশের তারিখ ১৫ এপ্রিল।

উল্লেখ্য, কৃষি গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (ময়মনসিংহ), শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা), গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ