জুনেই কি লাল-সবুজে সামিতের অভিষেক সম্ভব
Published: 12th, April 2025 GMT
হামজা চৌধুরীকে ঘিরে যে ফুটবল উন্মাদনা হয়েছিল, কানাডায় বসে তা দেখেছেন সামিত সোম। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা ফুটবলার লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেকের পর সামিতও মনে স্বপ্ন বোনেন। শিকড়ের টানে বাংলাদেশে খেলার আকাঙ্ক্ষা জাগে তাঁর মনে। কিন্তু কানাডার উন্নত জীবন ছেড়ে বাংলাদেশে আসবেন কিনা, সেই সিদ্ধান্তের জন্য বাফুফের কাছে দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছিলেন ২৭ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার।
এই সময়ে ই-মেইলে বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে অনেক বিষয় জানতে চেয়েছেন তিনি। দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্তারাও জবাব দিয়েছেন দ্রুত। সামিতের কাছ থেকে শুক্রবার ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কয়েক দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন পেলে তাঁর বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরির কাজ শুরু করবে বাফুফে।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১০ জুন ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই-পর্বের ম্যাচ দিয়ে লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হতে পারে কানাডার প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ক্যাভারলি এফসির হয়ে খেলা এ তারকার। বাফুফে অন্তত এমনটাই মনে করছে।
সামিত সোমের বাংলাদেশের হয়ে খেলার রাস্তাটা খুব একটি কঠিন হওয়ার কথা নয়। কারণ তিনি কানাডা জাতীয় দলের জার্সিতে কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেননি। কাজেই ফিফার আইনে তিনি দেশ বদল করতে পারবেন। বাফুফে খুব করে চাইছে জুন উইন্ডোতে তাঁকে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াতে দেখা যেতে পারে।
সামিতকে বাংলাদেশি হওয়ার জন্য লাগবে ফিফা প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির অনুমোদন। যেমনটি হামজার ক্ষেত্রে হয়েছে। এ ছাড়া ছাড়পত্র থাকতে হবে কানাডা সকার অ্যাসোসিয়েশনের। সামিতের সঙ্গে তাঁর পুরো পরিবারের বাংলাদেশের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হবে। সামিতের মা-বাবার বাংলাদেশি পাসপোর্ট আছে। তবে ১৯৯৩ সালের পর তা আর নবায়ন করেননি তারা। তাই সবার পাসপোর্ট নতুন করে বানাতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।