ফেনীতে থাইল্যান্ডের এক নারীকে (৪০) ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগে মোখসুদুর রহমান (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৪ এপ্রিল) পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

এর আগে, একই দিন ভুক্তভোগী মোখসুদুর রহমান ও নাম না জানা দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন।

গ্রেপ্তার মোখসুদুর রহমান ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের নোয়াবাদ মুসলিম মেম্বার ভূঁইয়া বাড়ির মৃত আব্দুর রবের ছেলে।

আরো পড়ুন:

হাসিনা-জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা, ৮২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী জন্মসূত্রে ভারতীয় হলেও বর্তমানে থাইল্যান্ডের নাগরিক। তিনি ২০২০ সালে হংকংয়ে একটি মুদির দোকান পরিচালনা করতেন। সেখানে মোখসুদুর রহমানের সঙ্গে পরিচয় হলে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অভিযুক্ত বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার সঙ্গে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বও গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে ব্যবসা ও জমি কেনার কথা বলে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ২ লাখ ১০ হাজার হংকং ডলার এবং কিছু স্বর্ণালঙ্কার নেন।

পরবর্তীতে মোখসুদুর ভিসাজনিত সমস্যায় হংকংয়ে কারাবন্দি হলে ওই নারী অর্থ ব্যয় করে তাকে মুক্ত করেন। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে মোখসুদুর বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এরপরেও তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এক পর্যায়ে তিনি ওই নারীকে স্ত্রী পরিচয়ে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ২২ মার্চ এবং ১২ অক্টোবর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোখসুদুর ভুক্তভোগী নারীকে বাংলাদেশে এনে ধর্ষণ করেন। সর্বশেষ গত ১৩ এপ্রিল ওই নারী ফেনীতে অভিযুক্তের বাড়িতে গেলে তিনি তাকে মারধর করে বের করে দেন এবং তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন, যাতে তাদের ব্যক্তিগত ছবি ও তথ্য সংরক্ষিত ছিল বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

এ ঘটনায় সোমবার ভুক্তভোগী নিজেই ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় মোখসুদুর রহমান ছাড়াও আরো দুইজনকে নাম না জানা আসামি করা হয়।

ফেনী মডেল থানার ওসি সামসুজ্জামান বলেন, “অভিযুক্ত মোখসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে।”

ঢাকা/সাহাব/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ