সুনামগঞ্জে বন্যার শঙ্কা, তিন অধিদপ্তরের ছুটি বাতিল
Published: 15th, April 2025 GMT
হাওর অধ্যুষিত জেলা সুনামগঞ্জে আগামী শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কায় হাওরের শতভাগ ধান কাটা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে নিজ কার্যালয়ে হাওরের ধান দ্রুত কর্তন ও আগাম বন্যায় করণীয় সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।
জেলা প্রশাসক বলেন, আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে সুনামগঞ্জে সপ্তাহব্যাপী বৃষ্টি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে হাওরের ধান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গে কর্তন করতে হবে। এ সময় তিনি বলেন, কৃষকরা প্রস্তুত থাকবেন। ধান পাহারা দিতে পারেন, যাতে হঠাৎ পানি বেড়ে ধানের ক্ষতি এড়ানো যায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুনামগমঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল, জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটের সভাপতি মাহবুবুর রহমান পীর, সুনামগঞ্জ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, সাংবাদিক আল হেলাল প্রমুখ।
সুনামগমঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার রাইজিংবিডি-কে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে আগামী সপ্তাহে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
ঢাকা/মনোয়ার/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন মগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
গঙ্গার ঢেউ কি বিহার থেকে বঙ্গের দিকে আসছে
প্রায় এক মাস হয়ে গেল বিহারের নির্বাচনের। ভারতের পূর্ব-দক্ষিণ অঞ্চলে এই নির্বাচনের ফল নিয়ে বিস্ময় কাটছেই না। বিজেপি জোট এখানে কেবল যে জিতেছে তা–ই নয়, বিপক্ষকে অনেকটা ধসিয়ে দিয়েছে। আগের চেয়ে কংগ্রেস জোটের প্রায় ৮০ আসন কমে গেছে। ২৪৩ আসনের বিধানসভায় বিজেপি জোটের দখলে গেল দুই শর বেশি আসন।
যদিও নিবিড় অনুসন্ধানে দেখা যায়, অধিকাংশ জায়গায় খুব অল্প অল্প ভোটে বিরোধীরা হেরেছে; কিন্তু আসনের বড় ব্যবধানে আরএসএস পরিবার দারুণ উজ্জীবিত। এখন তারা বলছে, গঙ্গার পানি বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে চলেছে জোয়ার হয়ে। কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রী সে রকমই হুঁশিয়ারি দিলেন কলকাতার অভিভাবকদের। সত্যি কি তা–ই ঘটতে চলেছে? গঙ্গার আসন্ন এই প্রবাহে পদ্মাপারের মানুষদের জন্যও বিশেষ বার্তা আছে কি?
এসআইআর তলোয়ার কাকে বধ করবে?ভারতের রাজনীতিতে বিহার ও বাংলার চরিত্র এক রকম নয়। তা ছাড়া প্রতি স্থানীয় নির্বাচনই স্থানীয় চরিত্রের। ফেডারেল ভারতের সেটা এক সৌন্দর্যও বটে। ভোটের মনোনয়ন ও প্রচারে বিহারে জাতপাতের বিবেচনা যতটা তীব্র, বাংলায় সে রকম ঘটে ধর্মীয় পরিচয়ে।
ফলে এটা বেশ প্রশ্নবিদ্ধ দাবি, বিহারের নির্বাচনী কলাকৌশল পশ্চিমবঙ্গও মাত করবে। তবে মমতার জন্য মাঠপর্যায়ে উদ্বেগজনক অনেক কিছু আছে। প্রায় দেড় দশক তিনি ও তাঁর দল ক্ষমতায়। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বহু অভিযোগ জমেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
তা ছাড়া সর্বভারতীয় বিজেপির তুলনায় তৃণমূল একান্তই প্রাদেশিক দল। পুরো বিজেপি ইতিমধ্যে প্রায় সব জনপদের উপযোগী দুর্দান্ত এক নির্বাচনী মেশিনে পরিণত হয়েছে। আবার ‘এসআইআর’–এর নামে পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি রাজ্যে সূক্ষ্ম পক্ষপাতদুষ্ট এক ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্বাচনের আগে-আগে। এর প্রয়োগ থেকে বিহারের মতোই বাংলায়ও রাজনৈতিক সুবিধা পেতে চাইছে বিজেপি।
আরও পড়ুনভারত: যে কারণে উত্তর জনসংখ্যা চায় কমাতে, দক্ষিণ চায় বাড়াতে ২৮ নভেম্বর ২০২৪‘এসআইআর’ হলো স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন। সরল বাংলায় যাকে বলে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। এই সংশোধনে বসে অনেক ভোটারের বেলায় প্রায় ১২টি নথি দেখাতে হবে। যে রাজ্যগুলোতে বিজেপিবিরোধীদের জমিন শক্ত, মুখ্যত সে রকম জায়গায় এটা শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্যে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা বড় সংখ্যায় ভোটার তালিকায় নাম তুলে ফেলেছে।
‘নিবিড় সংশোধন’ হলে বাদ পড়বে সেসব ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ ও ‘রোহিঙ্গারা’।
বিহারের অভিজ্ঞতা বলছে, এসআইআরে বাদ পড়ছে প্রধানত প্রান্তিক মানুষ; যারা পারিবারিক সব ধরনের নথিপত্র ঠিকঠাক রাখার মতো দক্ষ নয়। বাংলায় এ রকম বেশি ঘটবে মুসলমান, মতুয়া ও আদিবাসী অঞ্চলগুলোতে। এর মধ্যে মুসলমানেরা এখানে তৃণমূল, কংগ্রেস ও বামদের সমর্থক। বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকায় এ রকম নিবিড় সংশোধন চালানো হয় অতি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভরা আসনগুলোতে। স্থানীয়রা যেগুলোকে বলে ‘মার্জিনাল সিট’।