পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে চাঁদা না দেওয়ায় বালু ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েলসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেন ব্যবসায়ী রাসেল মৃধা।

অভিযোগে বলা হয়, রাসেল মৃধা মির্জাগঞ্জে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু ভরাটের ব্যবসা করেন। আগে বিএনপি নেতা জুয়েলকে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা দিয়েছেন তিনি। প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা দিতে চাপ দিলে অপারগতা প্রকাশ করেন রাসেল। গত রোববার সুলতানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের সময় লোকজন নিয়ে জুয়েল ৫০ হাজার টাকা না দিলে কাজ বন্ধের হুমকি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে রাস্তায় রাসেলের পথরোধ করে টাকা না দিয়ে কেন কাজ করছে– তার ব্যাখ্যা চান জুয়েল। এ সময় চাঁদা দিতে পারবেন না জানালে জুয়েল ও তাঁর সহযোগীরা রাসেলকে চড়থাপ্পড়, কিলঘুসি মারেন। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে জুয়েল চাঁদা ছাড়া ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না হুমকি দিয়ে চলে যান।

অভিযোগের বিষয়ে জুয়েল বলেন, ‘রাসেল দালাল ও চাঁদাবাজ। মাদক সিন্ডিকেটেও জড়িত। আমার ড্রেজার ব্যবসা আছে। সেখানে রাসেলই চাঁদা দাবি করেছিল। এখন উল্টো আমার বিরুদ্ধেই অভিযোগ করছে।’

জুয়েল উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহাবুদ্দিন নান্নুর ভাগনে। জানতে চাইলে নান্নু বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর তদন্ত হচ্ছে। দলে ভাই-ভাগনে বিষয় নয়; অপরাধ প্রমাণিত হলে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ছাত্রদল নেতার চাঁদা দাবির অডিও ভাইরালকছড়িতে

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় এক বালু ব্যবসায়ীর কাছে গাড়িপ্রতি ৫০০ টাকা দাবি করার অডিও ভাইরাল হয়েছে পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক একরাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। পরে গত শনিবার তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদল।
ভাইরাল অডিওটি নিজের নয় দাবি করে একরাম চৌধুরী বলেন, ‘রাজনৈতিক অবস্থান ভালো হওয়ায় একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি থানায় জিডি করেছি।’ যথাসময়ে শোকজের লিখিত জবাব দেবেন বলে জানান তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রধর ব যবস য় উপজ ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ