ফতুল্লায় এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি কাশীপুর ইউনিয়নের ভোলাইল নূর মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এ ঘটনার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আলহ্বাজ মোঃ স্বপন হোসেন। এ ঘটনায় তিনি জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী জানান, বিগত আওয়ামী সরকারের শাসনামলে আমি কাশীপুর বাঁশমুলি এলাকায় একটি জমি খরিদ করি। ওই জমিটি দখলের জন্য সন্ত্রাসীরা সে সময় অনেক চেষ্টা করে এবং আমাকে হুমকী দেয়। কিন্তু তারা জমি দখল করতে পারেনি।

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নেতারা পালিয়ে গেলেও ছিঁচকে এ সন্ত্রাসীরা এলাকায় রয়ে গেছে। তারা এখন বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি-সন্ত্রাসী করছে। ওই সন্ত্রাসীরা এখন আমার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে।

আমি তাদের দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র হত্যার মামলা ঠুঁকে দেয়। কিন্তু দু:খের বিষয় ওই মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানতে পারিনি। তাছাড়া আমি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তাদের পক্ষে ছিলাম।

ভোলাইল এলাকায় আন্দোলনকারীদের মাঝে আমি পানিও বিতরণ করেছি। এখন সেই আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি আমি!

তিনি আরো জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরেই আমার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেছে ওই সন্ত্রাসীরা। এখনো তারা আমার ক্ষতি করার অপচেষ্টা করছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যে তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করে সম্মানহানি করছে। আমি এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ওই নামধারী সন্ত্রাসীদের বিচার চাই।

আমি নারায়ণগঞ্জ জেলার ডিসি ও এসপি মহোদয় ছাড়াও প্রশাসনের কাছে বিষয়টি তদন্ত করে আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের সাথে সরাসরি জড়িত চক্রটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আম র ব র দ ধ ব যবস য় এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক

ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।

চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।

স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।

সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ