উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির মডেল (গ্রোথ মডেল) পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অবকাঠামো নির্মাণকে প্রবৃদ্ধির চলক হিসেবে ধরা হয়েছে; উপেক্ষা করা হয়েছে দক্ষ ও টেকসই কর্মসংস্থান বৃদ্ধির বিষয়কে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ আয়োজিত তিন দিনের অর্থনীতি সম্মেলনের শেষ দিনে এক গণবক্তৃতায় এ কথা বলেন হোসেন জিল্লুর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘সুশাসন ও অর্থনৈতিক রূপান্তরের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ শীর্ষক এ গণবক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়।

হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সস্তা শ্রমকে দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন মডেলের মূল শক্তি হিসেবে ধরা হয়েছে। এখন আমাদের সস্তা শ্রম থেকে বেরিয়ে উৎপাদনশীলতা এবং রপ্তানিমুখী প্রবৃদ্ধির দিকে যাওয়া উচিত কি না, সেটি দেখা প্রয়োজন। আবার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আমাদের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি স্থানীয় বিনিয়োগও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের বিনিয়োগ কম হচ্ছে; কর্মসংস্থান বাড়ছে আরও কম। আগে ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান হতো, এখন তা হচ্ছে না।’

হোসেন জিল্লুর রহমান আরও বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য অতীতে যেসব সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেগুলো এখন অচলায়তনে পরিণত হয়েছে। একদিকে প্রতিষ্ঠান অনেক বেড়েছে, অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্তশাসন কমেছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়েছে। প্রতিষ্ঠান বাড়ানো হলেও প্রয়োজনীয় লোকবল দেওয়া হয়নি। এসব কারণে সংস্কারের উদ্যোগ অচলায়তনে পরিণত হয়েছে। কুমিল্লার বার্ড এ ক্ষেত্রে একটি বড় উদাহরণ। এমন হাজারো উদাহরণ আছে।

হোসেন জিল্লুর রহমান আরও বলেন, বিষয়টি বোঝা খুব জরুরি। তা না হলে এখনো যেসব সংস্কার উদ্যোগ নেওয়া হবে, সেগুলোর একই পরিণতি হতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ স ন জ ল ল র রহম ন প রব দ ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিভিন্ন ফি ও চার্জ আরোপের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার খরচ আরও অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলছেন দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতারা।

ইন্টারনেটের দাম বাড়ার বিষয়টি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সেবাদাতারা।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) জন্য একটি গাইড লাইনের খসড়া করেছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে আইএসপিএবি।

নতুন গাইডলাইনে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য ১ শতাংশ দিতে হবে। এ ছাড়া এফটিএসপি অপারেটরদের ক্রয়মূল্য ১৪ শতাংশ বাড়বে।

আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে সরকার তার উদ্দেশ্য থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং জনগণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। সরকার ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমিনুল হাকিম বিদ্যমান নীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত নীতির তুলনামূলক উপস্থাপনা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যমান নীতিতে সরকার এই খাত রেভিনিউ শেয়ারিং, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল এবং ভ্যাটসহ ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় কিন্তু নতুন নীততে তা ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে। সরকারি নীতিতে শহর ও গ্রামে বৈষম্য বাড়বে।

আমিনুল হাকিম বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা সরকার বৈষম্য উপহার দিচ্ছে। সরকার একদিকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বলছে, অন্যদিকে নিজেরা দাম বাড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, স্টারলিংকের জন্য সরকার লাইসেন্স ফি ধরেছে ১০ হাজার ডলার অর্থাৎ ১২ লাখ টাকা। কিন্তু দেশের আইএসপিদের জন্য তা ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, স্টারলিংককে এত সুবিধা দেওয়ার কারণ কি?

সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়া গাইডলাইনে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস একসেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে ফিক্সড কানেক্টিভিটি দেওয়ার স্পষ্ট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা দেশীয় এবং নিজস্ব বিনিয়োগে গড়ে ওঠা আইএসপিগুলোর জন্য চরম অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া বড় প্রভাব পড়বে সাধারণ গ্রাহকের ওপর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ