মোহ
চঞ্চল শাহরিয়ার
যশোরের চটপটে মেয়ে ভুলে গেছে সব। দিনাজপুরের কান্তজী মন্দির, বগুড়ার মহাস্থানগড়, পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার, বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের পাশ দিয়ে যাবার সময় হাত ছুঁয়ে বলা সব কথা। বলেছিল, গোপন থাকুক সব। গোপন থাকুক রোকেয়া হলের পেছনে গাছের নিচে বসে চুমু খাওয়ার দিন।
যশোরের চটপটে মেয়ে ভুলে গেছে সব। ভুলে গেছে লালন মেলার সন্ধ্যা, ভুলে গেছে শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ীতে বেগুনি রঙের শাড়ি পরে আঁচল মেলে ধরার মুহূর্ত।
আমি গাধা ভুলিনি কিছুই। সীতাকুণ্ড পাহাড়ের গায়ে লিখে রাখি যশোরের চটপটে মেয়েটির নাম। চট্টগ্রাম নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে আড্ডা দিতে দিতে আচমকা বলে ফেলি যশোরের চটপটে গোলগাল মেয়েটির প্রতিশ্রুতি।
ইটের কান্নায়
আশরাফ জুয়েল
ফসিলের নিশ্বাসে ঘুমায় সভ্যতা,
গূঢ়মাটির স্তবকে–
ঘ্রাণনালিতে জমে আছে নদীভ্রূণে
স্ফটিক,
প্রতিটি ইট যেন স্বর্ণসহিস, স্রোতের বায়নায়
লেখা হৃতকাব্য; যেখানে সময়ের ঘোড়া
ঘুমায় বিবিধ বিশ্রামে।
সিংহাসনের ফরেনসিকে নিমজ্জিত এ
শহর–
নারীর দুঃখিত চুল চুইয়ে পড়া ক্ষোভ,
তার স্তনমুকুটে জেগে থাকা চন্দ্রের লোম।
ইতিহাসবিধৌত চামড়া–
এখন সমতলের অসুখে ফলছে বিদগ্ধ
পাতানের আলোড়ন, কৃষকের ডায়েরি ভর্তি
আত্মহত্যার লিরিক, পাতায় পাতায় ঝরে
পড়া মৃতশিশিরের গান।
মহাস্থানগড়–
কে কোথায় ভাসছে, ডুবছে কোন স্রোতের
ইশারায়, জানে না পুণ্ড্রের পতিত ঘড়ি,
শুধু ইটের কান্নায় ভেসে যায় অতিথি
সময়।
ফেরা হলো না
শারমিন সাথী
মন আজ বিষণ্নচিতা হয়ে আছে।
দাউদাউ করে জ্বলছে অগ্নি
অগ্নিবাষ্পে নদীর জল শুকিয়ে গেছে।
অথচ, আমার কাব্যে জল ছাড়া একটি শব্দও অবশিষ্ট ছিল না।
তাকেও তাড়া করেছে
চারণভূমি, রাস্তাঘাট, ইমারত।
এমনকি চোখের জলও বিলীন হয়ে খরা নামিয়ে দিয়েছে
চোখের ভেতর। চোখে ঘুম নেই। নির্ঘুম চোখ আর স্বপ্ন দেখে না।
দেখতে পারে না। ওলানের দুধ শুকিয়ে যাবার মতো স্বপ্নরাও উবে গেছে
অথবা, স্বপ্ন কী তা চোখেরা ভুলে গেছে।
সব কেবল চলে যাবার জন্য প্রস্তুত
কেউ ফিরে আসে না .
আমার ফেরার কথা ছিল।
জল শুকিয়ে যাবার ফলে
আমাদের আর ফেরা হলো না।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৩
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় মঞ্জু টেক্সটাইলে এন্ড ডাইং কারখানায় গ্যাস লাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে কারখানার দুই নিরাপত্তাকর্মীসহ তিন জন দগ্ধ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার তারাবো পৌরসভার কাজীপাড়া এলাকায় কারখানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন, সিকিউরিটি ইনচার্জ আব্দুল হান্নান, গার্ড কবির হোসেন ও সিনিয়র অফিসার সাইফুল ইসলাম।
কারখানার সুপারভাইজার মিজানুর জানান, নাইট ডিউটি শেষে সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা চলে যাওয়ার ঠিক পরপরই তিতাস গ্যাস সংযোগের আরএমএস রুমে গ্যাসের অতিরিক্ত চাপে বিকট শব্দে একটি দেয়াল ধসে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীসহ তিনজন দগ্ধ হন। বিস্ফোরণ ও আগুনের তীব্রতায় আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৫ জন দগ্ধ, সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক
মাইক্রোবাসে বিস্ফোরণ, অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন ৫ ছাত্রনেতা
তিনি জানান, কারখানায় দায়িত্বে থাকা টেকনিশিয়ান ও অন্যান্য নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত গ্যাসের চাবি বন্ধ করে নিজেরাই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দগ্ধ তিনজনকে দ্রুত রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। আগুনে কারখানার কিছু কাপড় ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ইউনিট সেখানে যায়। তবে তার আগেই কারখানার লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে। বিস্ফোরণ ও আগুনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি তিনজন দগ্ধ হয়েছেন এবং তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/অনিক/বকুল