রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানোর স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখা না গেলে যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দিনের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা থেকে সরে দাঁড়াবে। আজ শুক্রবার ফ্রান্সের প্যারিসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে সেখানে ইউরোপীয় ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর একক উদ্যোগে তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা শুরু করলে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ইউরোপের দেশগুলো। এ আলোচনার টেবিলে তারাও থাকতে চায়।

তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে ২০২২ সালে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ বন্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রচেষ্টা হোঁচট খায়।

মার্কো রুবিও বলেছেন, বৃহস্পতিবারের আলোচনায় ইউরোপীয় কর্মকর্তারা সহযোগিতার বিষয়ে খুবই আন্তরিক ছিলেন এবং গঠনমূলক মতামত দিয়েছেন। এই বৈঠকে রুবিওর পাশাপাশি এ সংকট সমাধানে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ইউক্রেনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই, তারা যেন এ আলোচনায় যুক্ত থাকে। আমার মনে হয়, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি আমাদের এই (যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা) বিষয়টি এগিয়ে নিতে সাহায্য করতে পারে এবং এরপর বিষয়টিকে সমাধানের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে।’

রুবিও বলেন, ‘কিন্তু আমাদের এখন এখানেই কয়েক দিনের মধ্যে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হবে, স্বল্প সময়ের মধ্যে এটি (সমাধান) সম্ভব কি না। কারণ, যদি তা না হয়, আমি মনে করি আমাদের অন্য বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে। গুরুত্ব দেওয়ার মতো আমাদের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত আরও বিষয় আছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আশা করছি, আগামী সপ্তাহের শুরুতে লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইউক্রেনের মধ্যে নতুন বৈঠক থেকে আরও সুনির্দিষ্ট জবাব আসবে।’

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর: খনিজ চুক্তির প্রথম ধাপ, বলল কিয়েভ২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য দ ধ বন ধ ও ইউক র ন ইউক র ন র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ