নারী অধিকার রক্ষা ও বৈষম্যমূলক আইন পরিবর্তনের সুপারিশ নিয়ে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিচ্ছে। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হকের নেতৃত্ব কমিশনের সদস্যরা আজ বিকেল সাড়ে চারটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন। এরপর বিকেল সোয়া পাঁচটায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন বিষয়ে তথ্য তুলে ধরা হবে।

পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অধিকার আদায় ও সমতা সৃষ্টিতে আশু, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি—এই তিন ধাপে সুপারিশ করা হচ্ছে। নারীর প্রতি বৈষম্য রয়েছে এমন সব আইনে পরিবর্তন চেয়েছে কমিশন। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেও নারী অধিকার বিষয়ে যেসব দাবি আদায় করা যায়নি সেসব বিষয়ে সুপারিশ খুব গুরুত্ব দিয়ে তুলে আনা হয়েছে প্রতিবেদনে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পারিবারিক আইনে পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্পদ-সম্পত্তি, সন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত, বিবাহ–বিবাহবিচ্ছেদে সব ধর্মের নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা।

জাতীয় সংসদে আসনসংখ্যা ৬০০ করে সেখান থেকে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রাখার সুপারিশ করা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের কমিটিতে নির্বাচনের মাধ্যমে নারী–পুরুষ প্রতিনিধি রাখার সুপারিশ করা হচ্ছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুসারে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (২০৩০ সাল) রাজনৈতিক দলের প্রতিটি স্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত না হলে ওই দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণার সুপারিশও থাকছে।

প্রতিবেদন প্রসঙ্গে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক গতকাল শুক্রবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শনিবার (আজ) বিকেলে প্রতিবেদন জমা দেব। আমরা আশা করব, সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হবে।’ এর আগে গত ২৯ মার্চ প্রথম আলোকে তিনি বলেছিলেন, আশু সুপারিশগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আর মধ্যমেয়াদি সুপারিশ নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের জন্য থাকছে। আর দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশগুলো থাকছে অধিকার ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে নারী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত ১১টি সংস্কার কমিশনের একটি হলো নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন। এর আগে ৩০ মার্চ নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। তবে ২৭ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পৃথক প্রজ্ঞাপনে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনসহ পাঁচ কমিশনের (অন্য চারটি কমিশন হলো স্বাস্থ্য, শ্রম, স্থানীয় সরকার ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন) মেয়াদ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত আরও এক মাস বাড়ানো হয়।

কমিশনের সুপারিশে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মী ও শ্রমজীবী নারীদের জন্য ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি বাধ্যতামূলক করা, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ বিধানের মাধ্যমে ১৮ বছর বয়সের আগে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার সুযোগ বাতিল, আন্তর্জাতিক সনদ ‘নারীর বিরুদ্ধে সব প্রকার বৈষম্য দূরীকরণ (সিডও)’ এর দুটি ধারার ওপর সংরক্ষণ প্রত্যাহারের সুপারিশ করছে কমিশন। বাংলাদেশ ১৯৮৪ সালে সিডো অনুমোদন করলেও ২ ও ১৬.

১ (গ) ধারার ওপর সংরক্ষণ রেখেছে। সনদের ২ নম্বর ধারায় বলা আছে, নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য নিরসনে শরিক দেশগুলো আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে এবং আইনের সংস্কার করবে। ১৬.১ (গ) ধারায় বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও দায়িত্বের কথা বলা হয়েছে। কোনো সরকার এ দুটি ধারার ওপর সংরক্ষণ প্রত্যাহার করেনি।

গত বছরের ১৮ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১০ সদস্যের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। কমিশনের প্রধান করা হয় শিরীন পারভীন হককে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স প র শ কর র জন ত ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স, সিজিপিএ ২.৫ হলেই আবেদন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অধীনে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ১৬তম ব্যাচে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৫) প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

প্রোগ্রামের বিবরণ

১. প্রোগ্রামের মেয়াদ-২ বছর।

২. ক্রেডিট ঘণ্টা-৫১।

৩. কোর্সের সংখ্যা-১৬, প্রজেক্ট পেপার থাকবে একটি।

৪. অনলাইনে আবেদন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

ভর্তির যোগ্যতা

১. যেকোনো বিভাগে ব্যাচেলর ডিগ্রি থাকতে হবে।

২. সব পাবলিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণি বা ডিভিশন অথবা সিজিপিএ ২.৫ (৪.০০ এর মধ্যে) থাকতে হবে।

২. কমপক্ষে এক বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

৩. অ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্স, অডিটিং ও আয়কর বিষয়ে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

৪. কাজের অভিজ্ঞতা ICAB, ICMAB, ACCA, গ্লোবাল ICSB ও FCA প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকতে হবে।

আরও পড়ুনইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের ওয়াইপিপি প্রোগ্রাম, আরবি অথবা ফরাসি ভাষায় দক্ষতায় বাড়তি সুযোগ০৩ মে ২০২৫পরীক্ষার বিস্তারিত

১. এমসিকিউ অংশ: গণিত, ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান বা সাধারণ জ্ঞান (যেকোনো একটি ব্যবসায় শিক্ষার বাইরের ছাত্রছাত্রীদের)।

২. লিখিত অংশ: ট্রান্সলেশন ও প্যারাগ্রাফ রাইটিং।

৩. মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।

ভর্তির বিস্তারিত তথ্য

১. আবেদনের শেষ তারিখ: ১৭ জুন ২০২৫।

২. ভর্তি পরীক্ষার তারিখ: ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার।

ক. এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষার সময়: বেলা ৩টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

খ. মৌখিক পরীক্ষার সময়: বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট।

আবেদনপত্রের মূল্য

১ হাজার ৫০০ টাকা।

আরও পড়ুনথাইল্যান্ডের এআইটি স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, জেনে নিন সব তথ্য০৪ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ