জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কারণ একে তো টেস্ট সিরিজ তার ওপর প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। এই সিরিজে তাই ভক্তদের আগ্রহ নেই। কিন্তু জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের অনীহা দেখানোর সুযোগ নেই।

সিলেটে রোববার সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে শান্ত জানান, ভক্তরা ছোট ও বড় দল টেনে তুলনা করতে পারেন। কিন্তু খেলোয়াড়দের পার্থক্য করার সুযোগ নেই। কারণ তারা পেশাদার। তারা ওই পার্থক্য করেনও না।

শান্ত বলেন, ‘যারা খেলা দেখেন তারা এই তুলনাগুলো করেন, যে জিম্বাবুয়ে ছোট দল বা ওটা বড় দল। কিন্তু পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমরা বল বাই বল চিন্তা কির। সে যে দলই হোক। আমরা জিম্বাবুয়ের সঙ্গে যে খেলাটা খেলবে সেই মানসিকতা, শরীরি ভাষা, চিন্তা-ভাবনা যেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও থাকে।’

শান্ত জানান, তারা ছোট-বড় এই পার্থক্য করেন না, ‘এই জায়গায় যেন আপনাদের (সংবাদ মাধ্যম) মধ্যেও ভিন্নতা তৈরি না হয়। আবার আমাদের দিক থেকেও যেন কোন পার্থক্য না থাকে। আমাদের দিক থেকে ছোট দল না বড় দলের সঙ্গে খেলছি এই পার্থক্য নেই।’ 

বাংলাদেশ ঘরের মাঠে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে ভালো ক্রিকেট খেলেনি। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিল। তার আগে ভারতের বিপক্ষেও টেস্টে ভরাডুবি হয়েছে। তবে নতুন বছরের নতুন টেস্ট সিরিজে মনোযোগ রাখতে চান অধিনায়ক শান্ত। তিনি দাবি করেন, অনুশীলনে তাদের ব্যাটিং ভালো হয়েছে।

শান্ত বলেন, ‘ব্যাটিং ভালো হচ্ছে। ভুলগুলো নিয়ে আমরা কাজ করেছি। আমি বলব যে, নতুন করে শুরু হচ্ছে। বছরের প্রথম টেস্ট আমাদের, যেন শুরুটা ভালো করতে পারি। আমি আশা করবো ব্যাটাররা ভালো করবে।’ এছাড়া নাহিদ রানাকে নিয়েও কথা বলেন বাঁ-হাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটার। জানান যে, নাহিদকে কখনো ১৪০ কিলোমিটারের নিচে বোলিং করতে দেখেনি। তার আশা, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও সেভাবেই বোলিং করবেন ডানহাতি এই পেস সেনসেশন।   

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বড় দল

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ