রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সন্তোষজনক উপস্থিতি
Published: 19th, April 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা ও দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত দুটি শিফটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পাঁচ বিভাগীয় কেন্দ্রে এবার মোট ১ হাজার ৮৭২টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় বসেছেন ৯৬ হাজার ১৬২ জন ভর্তিচ্ছু। সেই হিসেবে আসনের বিপরীতে লড়েছেন ৫১ জন শিক্ষার্থী। কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক বেলাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
রাবি ভর্তি পরীক্ষায় শহীদ আবু সাঈদ ও জেন-জি নিয়ে প্রশ্ন
রাবিতে ভর্তিচ্ছুদের পাশে শিবির-ছাত্রদল
পরীক্ষার প্রথম শিফটে ৪৮ হাজার ৮২ জনের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৫ হাজার ৭৯২ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৬ হাজার ৬৬৪ জন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮ হাজার ৫৭ জন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫ হাজার ২৬৮ জন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ৩০১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেওয়া কথা। এর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে শতকরা ৮৯.
দ্বিতীয় শিফটে ৪৮ হাজার ৮০ জন পরীক্ষার্থী মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৫ হাজার ৭৯২ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬ হাজার ৬৬৩ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ১০ হাজার জন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮ হাজার ৫৬ জন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫ হাজার ২৬৮ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ৩০১ জন অংশ নেওয়া কথা। এর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে শতকরা ৮৯.৮২ শতাংশ পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন।
তবে বাকি কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষার্থী উপস্থিতির হার জানা যায়নি।
এদিকে, ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা সকাল ১০টার কিছু আগে থেকেই নির্ধারিত কেন্দ্রের সামনে আসতে শুরু করেন। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরীক্ষার্থীরা সারিবদ্ধ হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। পরীক্ষার হলে কোনো ধরনের ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোন, ব্লুটুথ ও মেমোরিযুক্ত অন্য কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে নিতে দেওয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘এ’ ইউনিটের অধিনে চারটি অনুষদ ও একটি ইনস্টিটিউটের জন্য ১ হাজার ৮৭২টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে কলা অনুষদে ৮৮৬টি, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ৬৫৬টি, আইন অনুষদে ১৬০টি, চারুকলা অনুষদে ১২০টি এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৫০টি আসন।
এবারের পরীক্ষার প্রথম শিফটের প্রশ্নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ ও এই আন্দোলনের অন্যতম শক্তি জেনারেশন-জি নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। এছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়েও প্রশ্ন এসেছে। তবে এ ইউনিটের প্রথম শিফটের প্রশ্নপত্রে তিনটি প্রশ্নে ভুল পাওয়া গিয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর পাশাপাশি অরাজনৈতিক জেলা ও উপজেলা ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। পুরো রাবি ক্যাম্পাসই ভরে যায় চেয়ার-টেবিল-ব্যানারে।
ভর্তি পরীক্ষায় নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় যেকোনো জালিয়াতি ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় তৎপর রয়েছে। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ৭০ জন ট্রাফিক সদস্য, ১৫০ জন পুলিশ সদস্য, ৩০ জন গোয়েন্দা পুলিশ এবং বিএনসিসি ও স্কাউটের ২০০ জন সদস্য কাজ করেছেন।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ র থ র প রথম শ পর ক ষ য় ইউন ট র উপস থ ত র ভর ত
এছাড়াও পড়ুন:
বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক
রাজশাহীর ৯৯ ভাগ কীটনাশকের দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। সরকার নিষিদ্ধ করে রাখলেও নানা নামে এসব কীটনাশক বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। শতকরা ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই জানেন না এগুলো নিষিদ্ধ এবং বিপজ্জনক।
চলতি বছর রাজশাহীতে ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজশাহী নগরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর আটটি উপজেলার ১৯টি কৃষিপ্রধান গ্রামাঞ্চলে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, ভুক্তভোগীদের কেস স্টাডি, স্থানীয় কীটনাশক ডিলার, দোকানদার, পরিবেশক এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর কীটনাশকের ৯৯ ভাগ দোকানেই দেশে নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। এসব নাম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নিষিদ্ধ, বোতলের গায়ে নিচের দিকে জেনেরিক নাম খুব ছোট করে লেখা থাকে।
বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ যেসব কীটনাশক এখনো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো- জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জিএসিআই (কার্বোফোরান), ইঁদুর মারা বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) ও তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)। এই প্যারাকোয়াট বা ঘাস মারা বিষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে এগুলো আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি নষ্ট হয়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সরকারের কোনো তদারকি নেই। এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক কীভাবে বাজারে বিক্রি হয়, কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী সে বিষয়েও সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিষিদ্ধ কিছু কীটনাশকও আনা হয়। এগুলো যে দোকান থেকে কেনা হয়েছে তার রশিদও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে বারসিকের নির্বাহী পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, “এগুলো তো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কিনেছি। রশিদও আছে। এগুলো নিষিদ্ধ। আমরা এগুলো হাজির করতে বাধ্য হয়েছি। এই গবেষণা একটি ফৌজদারি অপরাধকে খুঁজে পেয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা, কীটনাশক আইন ও বিধি প্রয়োগ করা, কীটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করা, কীটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠন করার সুপারিশ করা হয়।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ