গভীর রাতে তিন ঘণ্টার পথ পাড়ি, শুধু এক জোড়া পা দেখার জন্য
Published: 20th, April 2025 GMT
লোকটাকে সবাই ‘এল লোকো’ বলে ডাকে। বাংলায় যার মানে ‘পাগল’। আর্জেন্টিনায় অবশ্য নামটা অপমানজনক বা বিরল কিছু না। বলা হয়ে থাকে, সে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকই বাকি অর্ধেককে ‘এল লোকো’ বলে ডাকে। তবে মার্সেলো বিয়েলসার ক্ষেত্রে এই নামটা কতটা যথার্থ, সেটার প্রমাণ পাওয়া যাবে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা, কার্লোস তেভেজ, হাভিয়ের মাচেরানো, হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরন ও অ্যান্ডার হেরেরার মতো তাঁর অনেক বিখ্যাত শিষ্যদের গল্পগুলো শুনলে।
পেপ গার্দিওলা, মরিসিও পচেত্তিনো ও ডিয়েগো সিমিওনের মতো বিখ্যাত ফুটবল কোচদের আদর্শিক গুরু তিনি এবং মনে করা হয়, ফুটবল ইতিহাসেরই অন্যতম উদ্ভট চরিত্র ও প্রহেলিকার নাম বিয়েলসা।
আর্জেন্টাইন এই ফুটবল কোচের পাগলামির অনেক বিখ্যাত গল্প আছে, যেগুলোর সন্ধান পাওয়া যাবে ব্রিটিশ ক্রীড়া সাংবাদিক টিম রিচের লেখা ‘দ্য কোয়ালিটি অব ম্যাডনেস: আ লাইফ অব মার্সেলো বিয়েলসা’ বইয়ে।
কীভাবে বিয়েলসা কিশোর পচেত্তিনোকে খুঁজে বের করেছিলেন এবং তাঁকে নিউয়েলস ওল্ড বয়েজে নিয়ে গিয়েছিলেন, পাঠকদের আজ বলা হবে সেই গল্পটা, যা আছে ‘দ্য কোয়ালিটি অব ম্যাডনেস: আ লাইফ অব মার্সেলো বিয়েলসা’ বইয়ের ‘দ্য রোড টু মারফি’ নামের অধ্যায়ে—
পাগলামির গল্প১৯৮৭ সাল, শীতকালের মাঝামাঝি। ঘড়িতে রাত একটা।
জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাওয়া রাস্তায় পথ হারানো একটা সাদা ফিয়াট ১৪৭ গাড়ি হঠাৎ একটা সার্ভিস স্টেশন খুঁজে পেয়ে থামল। কাউকে পথের দিশা জিজ্ঞেস করতে গাড়ি থেকে দুজন লোক বেরিয়ে এলেন। তাঁরা যাবেন মারফি নামের একটা ছোট শহরে, এক কিশোরের খোঁজে। যে কিশোরের এ সময় অবশ্যই ঘুমিয়ে থাকার কথা।
মরিসিও পচেত্তিনিও নামে সেই কিশোরের স্কুলে যাওয়ার জন্য ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠতে হয়। স্কুলে সে কৃষিবিজ্ঞান পড়ে। সার্ভিস স্টেশন থেকে পথের দিশা নিয়ে আবার গাড়িতে গিয়ে বসলেন দুই যাত্রী—মার্সেলো বিয়েলসা ও হোর্হে গ্রিফা।
খেলোয়াড় পচেত্তিনোকে আবিস্কার করেছিলেন মার্সেলো বিয়েলসা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব য় লস
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে সীমান্ত এলাকা থেকে যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার
পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বাড়ি থেকে রাজু ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা গেছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তবে ওই সীমান্তে বিএসএফের গুলির কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় সদর থানা-পুলিশ। নিহত রাজু ইসলামের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ঝুলিপাড়া এলাকায়। তিনি বিবাহিত এবং তাঁর তিন ছেলেমেয়ে আছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, রাজু গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিলেন। এরপর তিনি কখন বাইরে গেছেন, স্বজনদের কেউ জানেন না। রাত তিনটার দিকে তাঁকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ঘুম থেকে উঠে আহত অবস্থায় তাঁকে দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দেবীগঞ্জ উপজেলার কাছাকাছি গেলে তিনি মারা যান। পরে লাশ বাড়িতে আনা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজু স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে মারা গেছেন। পরে তিনি গিয়ে দেখেন, তাঁর দুটি পায়ের হাঁটু ও আশপাশে গুলির চিহ্ন। ভারত সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে তিনি মারা গেছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। কারণ, তাঁর পায়ে স্পষ্ট গুলির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, সকালে বিষয়টি জানাজানির পর বাড়িতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাতে ওই এলাকায় বিজিবির দুটি টহল দল দায়িত্বরত ছিল। তখন সীমান্তে গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিএসএফও গুলি করেনি বলে জানিয়েছে। এমনকি পরিবার থেকে প্রথম দিকে তাঁদের জানানো হয়, তিনি হৃদ্রোগে মারা গেছেন। তবে তিনি যে আহত হয়েছেন, সেটা সীমান্ত এলাকায় হয়েছেন নাকি বাংলাদেশের ভেতরে হয়েছেন, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন আছে, সেটি তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে গুলি কারা করেছে বা কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।