‘শুরু থেকেই বলে আসছি নির্বাচনে জিতবে ২১ জন, হারবে না কেউ’
Published: 20th, April 2025 GMT
অভিনয়শিল্পী সংঘের ত্রিবার্ষিক মেয়াদের নির্বাচনে গত শনিবার সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছেন নন্দিত অভিনেতা ও নির্দেশক আজাদ আবুল কালাম। শিল্পীদের কল্যাণে নানামুখী কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। পেশার স্বীকৃতি পেতে সর্বপ্রথম কাজ শুরু করতে চান এ অভিনেতা।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অভিনয় যে একটা পেশা, সেটাই এখনও রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত নয়। আমার চাওয়া অভিনয় রাষ্ট্রীয় পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পাক। এই কাজটি আমার আগের কমিটির নেতারাও করতে চেয়েছেন। আমি চাইব সেটি যেন বাস্তবায়ন হয়। এ ছাড়া আমাদের নতুন কমিটির কাজ হলো আগের কমিটি যে কাজগুলো শুরু করেছিল, সেগুলোর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘মব জাস্টিসের বিরুদ্ধে আমাদের সংগঠনের ভূমিকা জোরালো থাকবে। একটু খেয়াল করলে দেখবেন যখনই এ ধরনের পরিস্থিতি হয়েছে, অভিনয়শিল্পী সংঘ জোরালো প্রতিবাদ করেছে। তবে সবার প্রতিবাদের ভাষা তো আর এক হবে না। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব নেগোশিয়েট করতে। কখনোই আমরা আক্রমণাত্মক হব না। তবে আমরা সব সময় শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষায় পাশে থাকব, ন্যায়সঙ্গতভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে চাই।’
সবশেষে নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচন সবসময়ই সুষ্ঠু হয়। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। অভিনেতাদের চোখে নেতা হতে পারেন এমন ২১ জনকে নির্বাচন করেছেন তারা। সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো, এটা কোনো প্যানেলভিত্তিক নির্বাচন নয়। প্রত্যেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছেন। আর আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি যে, অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচনে জিতবে ২১, হারবে না কেউ। তার মানে হলো এখানে হার-জিত কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তবে এটা একটা চ্যালেঞ্জিং অর্জন।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নগর উন্নয়নে সবুজকে কেন্দ্রে রাখতে হবে
বাসযোগ্য নগরী গড়ে তুলতে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ সবুজ অঞ্চল রাখতে হয়। এ জন্য সব সংস্থার সমন্বয়ে স্বল্প–মধ্য–দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। শুধু নগর নয়, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সারা দেশের জন্য প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান (নেচার–বেজড সলিউশন) দরকার। জীবনযাপনে যেন প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটাও একই সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে নগর উন্নয়নে প্রকৃতির সুরক্ষা নিশ্চিতে করণীয় বিষয়ক এক তথ্য সংকলন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন নগরবিশেষজ্ঞরা। প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক জোট (আইইউসিএন) বাংলাদেশ এবং গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন (জিসিএ) যৌথভাবে সংকলনটি প্রণয়ন করেছে, যার অর্থায়ন করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। এতে ২০টি বিস্তৃতভাবে প্রয়োগযোগ্য ‘নেচার–বেজড সলিউশন’ উদ্যোগ উপস্থাপন করা হয়েছে, যাতে শহর পরিকল্পনাকারী, নীতিনির্ধারক ও উন্নয়ন অংশীদারদের জন্য একটি কৌশলগত দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান বা নেচার–বেজ সলিউশন হচ্ছে প্রকৃতির কোনো ধরনের ক্ষতি না করে বা মাটি, বায়ু, পানিসহ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অটুট রেখে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সচিব ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন। তিনি বলেন, ‘এই সংকলন শুধু একটি নথি নয়, এটি আমাদের সবুজ ও নিরাপদ শহর গঠনের প্রতিশ্রুতিকে দৃঢ়ভাবে তুলে ধরে।’
প্রকৃতির কাছে আমাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত মন্তব্য করে ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন বলেন, ‘আমাদের জীবনযাপনে প্রকৃতি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক এস এম মেহেদি আহসান বলেন, নগরকে বাসযোগ্য করতে হলে বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩০ শতাংশ অঞ্চল সবুজ রাখতে হয়। বাংলাদেশের জাতীয় লক্ষ্য সেটাই হওয়া উচিত।
বিষয়টি বিবেচনা করতে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে এস এম মেহেদি আহসান বলেন, ‘আমাদের একটা বিল্ডিং কোড আছে। সেটা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সংস্থার দক্ষতার উন্নয়ন করার সুযোগ আছে। পরিকল্পনা কমিশনের তথ্যে ১ হাজার ৪০০ প্রকল্প আছে। সেগুলোকে যদি প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের সঙ্গে যুক্ত করা যায় তাহলে একটা পরিবর্তন আসবে।’ তবে এটার জন্য সব মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের ক্লাইমেট ও এনভায়রনমেন্ট উইংয়ের টিম লিডার নাথানিয়েল স্মিথ বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু অভিযোজন সব সময় তাঁদের অগ্রাধিকারের মধ্যে আছে। বাংলাদেশের প্রকৃতি, জীবন–জীবিকার সুরক্ষা দিতে ব্রিটিশ সরকার স্থানীয় সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
জলবায়ু অভিযোজন খাতে অধিক বিনিয়োগ কীভাবে নিশ্চিত করা যায় সেটা নিয়ে ব্রিটিশ সরকার কাজ করছে জানিয়ে নাথানিয়েল স্মিথ বলেন, ‘আমরা সুন্দরবন, হাকালুকি হাওরের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় এগুলো রক্ষা করা জরুরি।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুর রশিদ মিয়া বলেন, ‘আমাদের চলমান কিছু প্রকল্পে আমরা প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের চর্চা করি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ক্লাইমেট মিটিগেটেড নলেজ হাব তৈরি করেছি। পাশাপাশি জার্মান সরকারের অর্থায়নে ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট লোকাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রকল্প চলছে।’ বাংলাদেশ সরকারের ১৩২টি প্রকল্প ও উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে ৩২টি প্রকল্পে প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান অনুসরণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্য দেন আইইউসিএনের বাংলাদেশের অ্যাক্টিং কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রাকিবুল আমিন এবং জিসিএর ইন্টেরিম কান্ট্রি ম্যানেজার এম ফয়সাল রহমান। মূল প্রবন্ধ পড়েন বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক আলিয়া শাহেদ।