খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন। মৃত্যুর আগের দিন ইস্টার সানডেতে পোপ ফ্রান্সিস শান্তির বার্তা দিয়েছেন। তার পক্ষ থেকে এক সহকারী বক্তব্য পাঠ করেন, যেখানে তিনি বলেন, অন্যের মতামতের প্রতি সম্মান ছাড়া কখনোই প্রকৃত শান্তি আসতে পারে না। ধর্মীয় স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছাড়া শান্তি সম্ভব নয়।
পোপ তার শেষ ভাষণে গাজাবাসীদের, বিশেষ করে সেখানকার খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর কথা স্মরণ করেন। চলমান সংঘাতের কারণে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়কে তিনি ‘দুঃখজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন, “এই সংঘাত মৃত্যু ও ধ্বংস ডেকে আনছে।”
তিনি বিশ্বব্যাপী বাড়তে থাকা ইহুদি-বিদ্বেষকে "উদ্বেগজনক" বলেও উল্লেখ করেন।
পোপ বলেন, “বিশ্বের নানা অঞ্চলে চলমান যুদ্ধগুলোতে আমরা যে মৃত্যুর পিপাসা ও হত্যার উন্মাদনা দেখছি, তা ভয়াবহ।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি উভয় জনগণের কষ্টের পাশে রয়েছি। যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছি, জিম্মিদের মুক্তি দিন এবং ক্ষুধার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান, যারা শান্তিময় ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে।”
এছাড়াও, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে “ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার” আহ্বান জানান।
সোমবার ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তা বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান নিউজ সার্ভিস। ৮৮ বছর বয়সে মারা গেলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের গুরুতর জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। এর আগে ইতালির রোমে একটি হাসপাতালে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা চলেছে তার।
সূত্র: বিবিসি
  
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’