নাটোরে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পা-চাপা দিয়ে শহর ঘোরানোর পর ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত
Published: 22nd, April 2025 GMT
নাটোরে ছাত্রলীগের কর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজ (এন এস কলেজ) ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নাটোর জেলা শাখার অধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই কলেজ শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। বিজ্ঞপ্তিটি গতকাল রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা ছাত্রদল সূত্রে জানা যায়, গত রোববার দুপুরে নাটোর শহরের কানাইখালি মহল্লায় জেলা ছাত্রলীগের কর্মী ফয়সাল হোসেনকে (২৫) অটোরিকশায় ওপর করে শুইয়ে পা চেপে নির্যাতন করা হয় এবং প্রকাশ্যে শহরের রাস্তায় ঘোরানো হয়। এই দৃশ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। ওই ঘটনায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি এস এম জুবায়েরসহ তাঁর অনুসারী কিছু ছাত্রদল নেতা-কর্মী জড়িত বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা খায়রুল আলম বাদী হয়ে জুবায়েরসহ ছাত্রদলের পাঁচ নেতা-কর্মীর নামে সদর থানায় মামলা করেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নজরে এলে দ্রুত ঘটনাটি তদন্ত করে। এরপর কলেজ ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেন বলেন, এন এস কলেজ ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তাঁরা অবগত হয়েছেন। কাউকে ধরে মারপিট করার নির্দেশনা দল থেকে দেওয়া হয়নি। তাই ছাত্রলীগের কর্মী ফয়সালকে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। সাংগঠনিকভাবে যেটা করার, কেন্দ্র তাই করেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র ক
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।