খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করেছে ভ্যাটিকান। 

ভ্যাটিকান থেকে জানানো হয়, সদ্য প্রয়াত পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আগামী শনিবার, ২৬ এপ্রিল সকাল ১০টা (স্থানীয় সময়) অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা এবং গ্রিনউইচ মান সময় অনুযায়ী সকাল ৮টায় এ অনুষ্ঠান শুরু হবে। খবর বিবিসির।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার সামনে খোলা প্রাঙ্গণে। পবিত্র এই আয়োজন পরিচালনা করবেন কার্ডিনালদের কলেজের ডিন জিওভান্নি বাত্তিস্ত রে। তিনি শেষ প্রার্থনা প্রদান করবেন, যার মাধ্যমে পোপ ফ্রান্সিসকে আনুষ্ঠানিকভাবে সৃষ্টিকর্তার হাতে সঁপে দেওয়া হবে।

পরে পোপের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে রোমের সান্তা মারিয়া ম্যাজিওরে, যেখানে তাকে সমাহিত করা হবে। 

ভ্যাটিকান আরও জানিয়েছে, বুধবার সকালে পোপ ফ্রান্সিসের কফিন আনা হবে সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায়। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।

এরআগে ভ্যাটিকান পোপের কিছু ছবি প্রকাশ করে। ছবিতে দেখা গেছে, পোপ ফ্রান্সিসের দেহ একটি খোলা কফিনে রাখা, তিনি লাল পোপীয় পোশাকে, মাথায় প্যাপাল মিত্র এবং হাতে রোজারি ধরে আছেন।

দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন ৮৮ বছর বয়সী পোপ ফ্রান্সিস। এর আগে ইতালির রোমে একটি হাসপাতালে বেশ কিছুদিন তার চিকিৎসা চলে। স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তা বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি অনুসারী তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত হচ্ছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ত য ষ ট ক র য অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ