মদিনা শহরকে কটাক্ষ করে কিশোরের পোস্ট, তারাগঞ্জে মহাসড়ক অবরোধ
Published: 22nd, April 2025 GMT
মুসলিমদের পবিত্র ভূমি মদিনা শহরকে কটাক্ষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক কিশোরের পোস্টকে কেন্দ্র করে রংপুরের তারাগঞ্জে প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন উত্তেজিত জনতা।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটায় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের বামনদীঘি এলাকায় অবরোধ করে তাঁরা ওই কিশোরের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের সনাতন ধর্মাবলম্বী এক কিশোর ফেসবুকে মদিনাকে কটাক্ষ করে একটি ভিডিও পোস্ট করে। পরে ভিডিওটির স্ক্রিনশট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আজ দুপুরে হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন পরিষদে বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের বামনদীঘি এলাকায় অবরোধ করে তাঁরা ওই কিশোরের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এতে মহাসড়কের দুই পাশে যানজট দেখা দেয়। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, সকাল থেকে প্রশাসনকে বললেও ওই কিশোরকে গ্রেপ্তারে কোনো ভূমিকা রাখছে না। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
স্থানীয় ইকরচালী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পবিত্র মদিনাকে নিয়ে এক হিন্দু ছেলে কটাক্ষ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে। তার শাস্তির দাবিতে বামনদীঘি এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন হয়। খবর পেয়ে ইউপি সদস্যদের নিয়ে সেখানে গিয়ে উপস্থিত জনতাকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নিই। এখন গাড়ি চলাচল করছে।’
তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানা বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার পর আমি ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। ওই কিশোরকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে বলেছি।’
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, সকালে হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতাকে বুঝিয়েছেন। ওই কিশোর বাড়িতে নেই। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ
টাঙ্গাইলের মধুপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগে নারী অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বারকে জুতাপেটা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে মধুপুরের আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিলে আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন আব্দুল জব্বার। গতকাল দুপুরে হঠাৎ করেই কয়েকজন নারী অভিভাবক তাঁর কক্ষে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা করেন। এ সময় সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগমসহ কয়েকজন তাদের হাত থেকে শিক্ষককে রক্ষার চেষ্টা করেন। এতে তাদের ওপরও ক্ষিপ্ত হন হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।
হামলায় অংশ নেওয়া জাহিন ওরফে জাহি ও ঝুমা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার পড়ানোর সময় মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। একই অভিযোগ করেন সুমি বেগম নামে আরেকজন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম বলেন, ‘আমি বিষয়টি সকালেই জানতে পেরে স্যারকে জানিয়েছিলাম। স্যার তখন অফিস কক্ষেই ছিলেন। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা অফিসে প্রবেশ করে হামলা করেন। এক পর্যায়ে জুতা দিয়ে পেটাতে থাকেন। আমরা অনেক কষ্টে তাঁকে হামলাকারীদের কবল থেকে উদ্ধার করি।’
মারধরের শিকার প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আমার মেয়েকে স্থানীয় এক যুবক উত্ত্যক্ত করত। তাকে বিভিন্ন সময়ে বোঝানো হয়েছে। কথা না শোনায় তাকে শাসন করা হয়েছিল। সেই ছেলে ষড়যন্ত্র করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত করলে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো দেখি। সেভাবেই আদর-শাসন করি। তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি বের করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের ভাষ্য, বিষয়টি জেনে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।