Samakal:
2025-11-02@06:59:52 GMT

বই খুঁজে পাচ্ছে না সই

Published: 22nd, April 2025 GMT

বই খুঁজে পাচ্ছে না সই

‘ভালো বই পড়া মানে গত শতাব্দীর সেরা মানুষদের সাথে কথা বলা’– প্রায় সাড়ে তিনশ বছর আগে কথাটি বলেছিলেন ফরাসি দার্শনিক র‍্যনে দেকার্ত। প্রযুক্তির দাপটে সময় বদলেছে, বদলেছে জীবনধারা। এখন সবই হাতের মুঠোয়, কিন্তু বইয়ের প্রতি আগ্রহ যেন কমেই চলেছে– বিশেষত তরুণদের মাঝে।
রাজবাড়ীর প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা মনে করেন, তরুণ প্রজন্মের বইবিমুখতার অন্যতম কারণ মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তি। অথচ নিজেকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই।
একসময় বিকেল হলেই পাঠকের ভিড়ে মুখর থাকত শতবর্ষী রাজবাড়ী পাবলিক লাইব্রেরি। গত সোমবার সন্ধ্যায় এ লাইব্রেরিতে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন পাঠক আছেন। সবাই পত্রিকা পড়ছেন। লাইব্রেরিয়ান বদিউল আলম বুলবুল জানান, এ লাইব্রেরির আজীবন সদস্য ১০৫ জন, সাধারণ সদস্য ১৩৫ জন। এমন একটা সময় ছিল যখন প্রতিদিন লাইব্রেরির সদস্যরা বই লেনদেন করত। ২০১৮ সালের পর থেকে তা আর হচ্ছে না। 
রাজবাড়ী সরকারি গণগ্রন্থাগারে গিয়ে দেখা যায় প্রায় ৪০ জন পাঠক। তারা মূলত পত্রিকা, একাডেমিক বই বা চাকরির জন্য সহায়ক বই পড়ছেন, তথ্য সংগ্রহ করে নোট নিচ্ছেন। মাত্র একজনকে দেখা গেল উপন্যাস পড়তে। 
গণগ্রন্থাগারের রিডিং হল অ্যাসিস্ট্যান্ট মো.

আসাদুজ্জামান জানান, এই গ্রন্থাগারে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, জীবনী, রেফারেন্স, প্রবন্ধ ইত্যাদি সব ধরনের বই আছে। প্রতিদিন গড়ে একশ-দেড়শ পাঠক আসেন। বেশির ভাগই পত্রিকা পড়েন। চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন পাঠকের সংখ্যা বেশি। গল্প, উপন্যাস পড়তে খুব কম পাঠকই আসেন এখানে।
রাজবাড়ী সরকারি কলেজের লাইব্রেরিতে গিয়ে কথা হয় বুক শর্টার নুরুন্নাহারের সঙ্গে। জানালেন, তাদের লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা ২১ হাজার ২৫৬। একাডেমিক বইয়ের সংখ্যাই বেশি। সাহিত্যের বই আছে দুই হাজারের মতো। প্রতিদিন গড়ে একশ ছাত্রছাত্রী আসে মূলত একাডেমিক বই পড়তে। গল্প-উপন্যাসের পাঠক শতকরা দুই-তিনজন হতে পারে। 
বই বেচাকেনা কমেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও। রাজবাড়ী শহরের শামীম লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী সৈয়দ মোকাদ্দেস আলী সাগর বলেন, পাঁচ বছর ধরে গল্প-উপন্যাসের বেচাকেনা একবারেই কম। আগে যেমন স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা বই কিনত, এখন সেভাবে কেনে না। অনেকেই ইন্টারনেট থেকে বই সংগ্রহ করে নিচ্ছেন।
বই পড়া নিয়ে তরুণ প্রজন্মের ভাবনা কী– এমন প্রশ্নে রাজবাড়ী সরকারি কলেজের ছাত্রী নাবিলা রহমান বলে, পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য বই খুব একটা পড়া হয় না। কিন্তু সে এটা বোঝে যে, নিজেকে সমৃদ্ধ করতে বই পড়া খুব জরুরি। 
বই চর্চা কেন জরুরি– এ প্রসঙ্গে রাজবাড়ী জেলার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বইয়ের মাধ্যমে আমরা অতীত জানি, বর্তমান ধরে রাখি, সুদূরের পরিকল্পনা করি।
আরেক প্রবীণ ব্যক্তিত্ব দেবাহুতি চক্রবর্তীর মতে, মাদকাসক্তি ও মোবাইল ফোন আসক্তি তরুণদের বই থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ বই-ই সুকোমল বৃত্তি, মানবিকতা, যুক্তিবোধ ও বিজ্ঞানমনস্কতা বিকাশের প্রধানতম মাধ্যম।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বই উপন য স বইয় র

এছাড়াও পড়ুন:

দুবাই থেকে দেশে ফিরে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার ৫৭ মামলার আসামি

চট্টগ্রামে বাড়ি। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ৫৭টি মামলা। তবে তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে পালিয়ে ছিলেন দুবাইয়ে। গ্রেপ্তার এড়াতে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশে ফিরছিলেন। এরপরও তাঁর রক্ষা হয়নি তাঁর। সিলেটে বিমানবন্দর থেকেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন পলাতক এই আসামি।

গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে গ্রেপ্তার হওয়া এই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ রুহুল আমিন (৫৫)। বিমানবন্দরে নিয়োজিত ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। আজ রোববার সকালে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মোহাম্মদ রুহুল আমিনের বাড়ি পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের পাইরোল গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আবদুস সালাম। চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাইয়ে ফিশারিঘাটে মাছের আড়ত ছিল রুহুল আমিনের।

পুলিশ জানায়, মোহাম্মদ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোর বেশির ভাগই চেক প্রতারণার অভিযোগে করা। এর মধ্যে ১০টি মামলায় তাঁর সাজা হয়েছে। বাকি মামলা বিচারাধীন। বিদেশভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পরোয়ানাভুক্ত এই আসামি সাজা ও গ্রেপ্তার এড়াতে দুবাইয়ে পালিয়ে যান। পাঁচ বছর পর সেখান থেকে গোপনে সিলেট হয়ে দেশে ফিরছিলেন তিনি।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, পটিয়া থানার পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার রুহুল আমিনকে গতকাল রাতেই সিলেট থেকে পটিয়ায় নিয়ে আসা হয়। এরপর আজ সকালে পটিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ