মাদারগঞ্জে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, সমবায় সমিতির পরিচালক আটক
Published: 23rd, April 2025 GMT
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ করে আত্মগোপনে থাকা আল আকাবা সমবায় সমিতির পরিচালক মাহবুবুর রহমান মাহবুবকে আটক করেছে গ্রাহকরা। এরপর তাকে জুতার মালা গলায় পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জামালপুর জেলা শহর থেকে গ্রাহকরা তাকে আটক করে। পরে মাদারগঞ্জ থানা পুলিশে এসে তাকে তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন।
গ্রেপ্তার মাহবুবুর রহমান উপজেলার গুনারীতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি মাদারগঞ্জ শতদল সমবায় সমিতি লিমিটেডের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।
ওসি হাসান আল মামুন বলেন, আসামির বিরুদ্ধে মাদারগঞ্জে সমবায় সমিতির তহবিল বা সম্পদ নিয়ে মামলা রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে এই উপজেলায় বিভিন্ন নামে সমবায় সমিতির গ্রাহকের শতশত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে বেড়াতেন। গত কয়েক মাস ধরেই আসামিদের গ্রেপ্তার ও জমানো টাকা ফেরত পেতে মাদারগঞ্জ হাজারো গ্রাহক কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। সমিতির অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মাদারগঞ্জ উপজেলায় ২৩টি নিবন্ধনকৃত সমবায় সমিতি ৩৫ হাজার গ্রাহকের প্রায় ৭ শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অফিস তালাবদ্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায়। এর প্রতিবাদে হাজার হাজার নারী-পুরুষ প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গ্রাহকরা আমানত ফেরত না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক ম দ রগঞ জ গ র হক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।