ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত বন্দুকধারীদের খুঁজতে আজ বুধবার বড় ধরনের অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। এ ঘটনাকে ২০০০ সালের পর ওই অঞ্চলে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগামে এ হামলা হয়। বন্দুকধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র এএফপিকে বলেছে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ২৬।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ হামলাকে একটি ‘জঘন্য কাজ’ হিসেবে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

মোদি সৌদি আরব সফরে ছিলেন। কাশ্মীরে হামলা হওয়ার পর তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরেছেন। সরকারি এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, দেশে ফেরামাত্রই মোদি ভারতের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে যতগুলো হামলা হয়েছে, সেগুলোর চেয়ে এটা আরও বড়।

এখন পর্যন্ত কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে মুসলিম–অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে বিদ্রোহীরা ১৯৮৯ সাল থেকে সক্রিয় আছে। তারা স্বাধীনতা চাইছে অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হতে চাইছে। পাকিস্তানও কাশ্মীর অঞ্চলের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ভারতের মতোই এটির সম্পূর্ণ মালিকানা দাবি করে।

পেহেলগাম গ্রীষ্মকালে ঘোরার জন্য পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি জায়গা। শ্রীনগর শহর থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার।

পেহেলগামে হামলাস্থলের কাছে অবস্থানকারী এএফপির সাংবাদিকেরা বলেছেন, ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
কাশ্মীরে নিযুক্ত থাকা ভারতীয় সেনা দল চিনার কোরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমানে তল্লাশি অভিযান চলছে। হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার লক্ষ্য নিয়ে সব তৎপরতা চলছে।’

পেহেলগাম গ্রীষ্মকালে ঘোরার জন্য পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি জায়গা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২০, আহত তিন শতাধিক
  • দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
  • অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খোলা, ছাড়েনি জাহাজ
  • পর্যটন শিল্প বিকাশে আইকন গ্লোবাল ট্যুর অপারেটর আল মামুন
  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • কক্সবাজার সৈকতে ঘোড়া, কুকুর ও গরু, স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটুকু