কাশ্মীরে হামলাকারীদের খুঁজতে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর জোরালো অভিযান
Published: 23rd, April 2025 GMT
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত বন্দুকধারীদের খুঁজতে আজ বুধবার বড় ধরনের অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। এ ঘটনাকে ২০০০ সালের পর ওই অঞ্চলে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগামে এ হামলা হয়। বন্দুকধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র এএফপিকে বলেছে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ২৬।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ হামলাকে একটি ‘জঘন্য কাজ’ হিসেবে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
মোদি সৌদি আরব সফরে ছিলেন। কাশ্মীরে হামলা হওয়ার পর তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরেছেন। সরকারি এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, দেশে ফেরামাত্রই মোদি ভারতের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে যতগুলো হামলা হয়েছে, সেগুলোর চেয়ে এটা আরও বড়।
এখন পর্যন্ত কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে মুসলিম–অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে বিদ্রোহীরা ১৯৮৯ সাল থেকে সক্রিয় আছে। তারা স্বাধীনতা চাইছে অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হতে চাইছে। পাকিস্তানও কাশ্মীর অঞ্চলের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ভারতের মতোই এটির সম্পূর্ণ মালিকানা দাবি করে।
পেহেলগাম গ্রীষ্মকালে ঘোরার জন্য পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি জায়গা। শ্রীনগর শহর থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার।
পেহেলগামে হামলাস্থলের কাছে অবস্থানকারী এএফপির সাংবাদিকেরা বলেছেন, ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
কাশ্মীরে নিযুক্ত থাকা ভারতীয় সেনা দল চিনার কোরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমানে তল্লাশি অভিযান চলছে। হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার লক্ষ্য নিয়ে সব তৎপরতা চলছে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে
সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে কক্সবাজারের নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে হাজির হয় ১১ পর্যটকের একটি দল। তবে ঘাটে পৌঁছানোর আগেই নির্ধারিত জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ঘাটে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে। দলের একজন নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঘাটে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পরে বিপাকে পড়তে হয় ওই পর্যটক দলের সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, বাঁকখালী নদীর জোয়ার–ভাটা একেক সময় একেক রকম। জোয়ার–ভাটা বিবেচনায় নিয়ে জাহাজ ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। ইউএনওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই পর্যটক ঘাটে এসে জাহাজ দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম। তিনি হয়তো ঘাটে থাকা ইউএনওকে চিনতে পারেননি। সাধারণ নারী মনে করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে আরেকটি জাহাজে পর্যটকদের ওই দল সেন্ট মার্টিনে যায়।
জানতে চাইলে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কেন জাহাজ ছেড়ে গেছে, এ বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ইব্রাহিম নামের ওই ব্যক্তি। এ সময় নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করতে। এ ঘটনার ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।’
ইউএনও বলেন, পর্যটকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ে। কয়েকটি জাহাজে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে করা না হয়, সে বিষয়টি তদারকি করে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি।
১ ডিসেম্বর কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে রাত্রী যাপনের সুযোগও রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার ঘোষিত ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।