কার্গো ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত ওসমানী বিমানবন্দর
Published: 24th, April 2025 GMT
কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সব প্রস্তুতি সেরেছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা জোরদার ও বসানো হয়েছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। ২৭ এপ্রিল প্রথম ফ্লাইটের গন্তব্য স্পেন। দেশটির ইনডিটেক্স নামে বায়ার কোম্পানির পণ্য যাবে।
গ্যালিস্টার ইনফিনিট এভিয়েশনের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির পুরো বিষয় তত্ত্বাবধান করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। কার্গো ফ্লাইট সামনে রেখে সিলেটের রপ্তানিকারকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। তাদের প্রত্যাশা– সিলেট নয়, সেবার মান উন্নত হলে ভারতের সেভেন সিস্টার্স অঞ্চলের ব্যবসায়ীরাও ওসমানী বিমানবন্দরের এ সুবিধার আওতায় আসবেন।
গত সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, শ্রমিকরা কার্গো কমপ্লেক্সের ভেতরে ও বাইরে রঙের কাজ করছেন। একটি অংশ পণ্য রাখার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে; আরেকটিতে বসানো হয়েছে ইভিএস, ডুয়েল এক্স-রেসহ স্ক্যানিং মেশিন। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রস্তুত রয়েছে সাব-স্টেশন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা কার্যক্রমের নিরাপত্তা দেবে বেবিচক। আর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে থাকবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
এতদিন ভারতের পেট্রাপোল ও গেদে স্থলবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির (ট্রান্সশিপমেন্ট) যে সুবিধা বাংলাদেশ পেত, গত ৮ এপ্রিল তা বাতিল করে দিল্লি। এর পর সড়কপথে দিল্লি বিমনবন্দর হয়ে আকাশপথে কার্গো পরিবহনের বিকল্প হিসেবে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমেদ সমকালকে জানান, ঢাকার পর সিলেটে প্রস্তুত করা হয়েছে দ্বিতীয় কার্গো স্টেশন। শুরুতে ইউরোপের কয়েকটি দেশে পণ্য সরাবরাহ করা হবে। বায়ার কোম্পানিসহ আমদানি-রপ্তানিকারকদের ওপর কার্গো ফ্লাইটের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে।
বেবিচক জানিয়েছে, কার্গো ফ্লাইট চালু হলে ওসমানী বিমানবন্দর দিয়ে সরাসরি পণ্য যাবে যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। কারণ, এসব দেশে সিলেট অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্যের কদর রয়েছে। সিলেটের আমদানি-রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, তাদের অঞ্চলের শাকসবজি, জারা লেবু, পান, নাগা মরিচ, ফ্রোজেন ফিশ, নানা জাতের সুগন্ধি চাল, ঐতিহ্যবাহী মণিপুরি শাড়ি, সাতকরা, বেতের আসবাব ও নকশিকাঁথার বিশাল বাজার রয়েছে ইউরোপ এবং মধ্যপাচ্যে।
জালালাবাদ ভেজিটেবল অ্যান্ড ফ্রোজেন
ফিশ এক্সপোর্ট গ্রুপের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ড অ্যাসোসিয়েশন কমিটি সিলেটের চেয়ারম্যান হিজকিল গুলজার সমকালকে বলেন, কার্গো ফ্লাইট এ অঞ্চলের রপ্তানিকারকদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল, যা ২৭ এপ্রিল পূরণ হতে চলেছে। আমরা ঢাকায় বিভিন্ন চার্জ কমানোর দাবি করেছি। এটি কার্যকর হলে সহজে সিলেট থেকে বাংলাদেশ বিমানসহ বিভিন্ন কোম্পানির উড়োজাহাজে পণ্য রপ্তানি করতে পারব। সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে অদূর ভবিষ্যতে সেভেন সিস্টার্সের ব্যবসায়ীরাও সুবিধা নিতে পারবেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রস ত ত ফ ল ইট র জন য ওসম ন
এছাড়াও পড়ুন:
রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই, প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব: বাণিজ্য উপদেষ্টা
১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকবে বলে মনে করছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা প্রথম আলোকে জানান, বাণিজ্য উপদেষ্টা তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে আমরা ২০ শতাংশের নিচে প্রত্যাশা করেছিলাম।’
স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে নতুন এই হার ঘোষণা করা হয়। সবশেষ বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের কথা জানিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। সে হিসাবে শুল্ক ১৫ শতাংশ কমিয়ে নতুন হার ঘোষণায় করা হয়েছে।
ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। আদেশে বাংলাদেশ ছাড়াও কয়েক ডজন দেশের ওপর মার্কিন শুল্কের হার তুলে ধরা হয়েছে। বাকি দেশগুলোর মধ্যে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ,পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ২০ শতাংশ ও ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
আজ থেকে বাংলাদেশকে বর্তমানের গড় ১৫ শতাংশ ও নতুন পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ, অর্থাৎ মোট ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করতে হবে।
পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে। শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে টানা তিন দিন আলোচনা করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। মঙ্গল ও বুধবারের পর গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এ ছাড়াও দলে ছিলেন—জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী।
আরও পড়ুন১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ ১ ঘণ্টা আগে