হরমোন গুরুত্বপূর্ণ, তাই এ নিয়ে সচেতন হোন
Published: 24th, April 2025 GMT
বিশ্বব্যাপী আজ (২৪ এপ্রিল) পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব হরমোন দিবস’। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘হরমোন যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ, এ নিয়ে সচেতন হোন।’ অনেকেই জানেন না হরমোন কী এবং হরমোনজনিত রোগ বলতে কী বোঝায়। একটা সময় শুধু ইউরোপেই এ দিবস পালিত হতো। কিন্তু দুই বছর ধরে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও দিনটি বিশ্ব হরমোন দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
আমাদের শরীরের বিভিন্ন অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে অনেক রাসায়নিক তৈরি হয়, যা রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। গুরুত্বপূর্ণ হরমোনগুলো হলো ইনসুলিন, থাইরয়েড হরমোন কর্টিসোল, সেক্স হরমোন ইত্যাদি। এসব হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় দেখা দেয় নানা রোগবালাই।
হরমোন ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘটলে ডায়াবেটিস, থাইরয়েড সমস্যা, বন্ধ্যত্ব, স্থূলতাসহ নানা জটিল রোগ দেখা দিতে পারে। জিনগত ও অটোইমিউন সমস্যার পাশাপাশি হরমোনজনিত সমস্যার পেছনে একটা বড় কারণ হলো আমাদের জীবনাচরণ ও খাদ্যাভ্যাস। তাই আমাদের সুষ্ঠু জীবনাচরণ পদ্ধতি মেনে চলা উচিত।
হরমোনের গুরুত্ব ও কাজহরমোন দেহের বহু গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনায় ভূমিকা রাখে, যার মধ্যে রয়েছে:
শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশ।
বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা।
প্রজননক্ষমতা ও যৌনস্বাস্থ্য।
মানসিক স্থিতি ও জ্ঞানীয় ক্ষমতা।
ওজনের ভারসাম্য।
করণীয়সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। খাদ্যের ছয়টি উপাদানই সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। হরমোনের কার্যক্রমে দরকার কিছু খনিজ ও ভিটামিন, যেমন ভিটামিন ডি, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম।
নিয়মিত কায়িক শ্রম ও ব্যায়াম হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক। এটি বিপাক ও ওজন ভারসাম্যও রক্ষা করে, যা হরমোনজনিত রোগকে দূরে রাখে।
হরমোন নিঃসরণের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে ঘুম অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন ৭ ঘণ্টা (৬-৮ ঘণ্টা) ঘুমানো প্রয়োজন। এমনকি মেলাটোনিন হরমোন আমাদের নিদ্রার ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করে। এই ছন্দের ব্যত্যয় করা ঠিক নয়।
ক্ষতিকর রাসায়নিক থেকে দূরে থাকা উচিত। কারণ, এগুলো গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থির জন্য ক্ষতিকর। যেমন প্লাস্টিক, পেস্টিসাইড ও প্রসেসড কেমিক্যালস।
বৈজ্ঞানিক চিকিৎসার সাহায্য নেওয়া উচিত। হরমোনজনিত অনেক সমস্যার জন্য মানুষ অপচিকিৎসার শিকার হন। যেমন স্থুলতা, যৌন সমস্যা, বন্ধ্যত্ব, শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের সমস্যা, এমনকি ডায়াবেটিসের জন্যও। এতে জটিলতা আরও বাড়ে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ রস ম য হরম ন র আম দ র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে সরব মোদি কেন শেষ পর্যন্ত চুপসে গেলেন
ভারতের নির্বাচন কমিশন ও তার কাজ–সম্পর্কিত পাঁচটি প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে মুখোমুখি বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। কিন্তু অমিত শাহ তা গ্রহণ করলেন না। নির্বাচন ঘিরে কমিশনের (ইসি) এখতিয়ার এবং ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন পদ্ধতি (এসআইআর) নিয়ে বিরোধীদের তোলা প্রশ্নের উত্তরগুলো তাই অনুচ্চারিতই রয়ে গেল।
এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর আজ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন দেয়নি। লোকসভার দুই দিনের বিতর্ক শেষেও তা পাওয়া গেল না। বিতর্ক ঘিরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জবাব কার্যত রাজনৈতিক হয়ে রইল।
লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনের শুরু থেকেই বিরোধীরা এসআইআর নিয়ে আলোচনার দাবি তুলেছিলেন। অন্যদিকে সরকার চাইছিল জাতীয় গান ‘বন্দে মাতরম’–এর সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে আলোচনা করতে। বিরোধীরা সরকারের দাবি মেনে নেওয়ায় সরকারও বাধ্য হয় বিরোধীদের দাবি মানতে।
তবে আলোচনা শুধু ‘এসআইআর’–এর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সরকার ঠিক করে, বিতর্কের বিষয়বস্তু হবে ‘নির্বাচনী সংস্কার’। সরকার জানায়, প্রথমে আলোচিত হবে ‘বন্দে মাতরম’, পরে নির্বাচনী সংস্কার।
বিরোধীরা বলেন, আরএসএসের সদর দপ্তর ও শাখাগুলোতেও ‘বন্দে মাতরম’ গান গাওয়া হয়নি। এমনকি বহু বছর আরএসএস শাখা ও সদর দপ্তরে স্বাধীন দেশের জাতীয় পতাকাও তোলা হয়নি।বিজেপি ও সরকার ‘বন্দে মাতরম’ বিতর্কে কোণঠাসা করতে চেয়েছিল প্রধানত কংগ্রেসকে। তাদের অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রধানত জওহরলাল নেহরু ‘বন্দে মাতরম’ গানের অঙ্গচ্ছেদের জন্য দায়ী এবং সেটি তিনি করেছিলেন মুসলিম লিগ ও মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর চাপে। তাদের মতে, ওটা ছিল কংগ্রেসের ‘মুসলিম তোষণের’ বড় প্রমাণ।
কিন্তু লোকসভা ও রাজ্যসভার বিতর্কে দেখা গেল, সব বিরোধী দল ‘বন্দে মাতরম’ প্রশ্নে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়াল, এমনকি বিজেপির শরিক জেডিইউ পর্যন্ত। প্রত্যেকেই তথ্য দিয়ে জানাল, ‘বন্দে মাতরম’–এর প্রথম দুই স্তবক রেখে বাকিগুলো না গাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। তাঁর সঙ্গে পূর্ণ সহমত হয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী, সরদার বল্লভভাই প্যাটেল, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, বাবাসাহেব আম্বেদকরেরা।
দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক বিরোধী বক্তা এই বিতর্কে বিজেপিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করান, স্বাধীনতা সংগ্রামে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) বিন্দুমাত্র ‘ইতিবাচক ভূমিকা’ না থাকার অপরাধে। এই অভিযোগেও বিজেপিকে বিদ্ধ হতে হলো যে তারাও বহু বছর পর্যন্ত ‘বন্দে মাতরম’ উচ্চারণ করেনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণ, যিনি ‘বন্দে মাতরম’-এর স্রষ্টা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিমদা’, বিপ্লবী পুলিনবিহারী দাসকে ‘পুলিন বিকাশ’ ও সূর্য সেনকে ‘মাস্টার’ বলে অভিহিত করে ক্ষীণ ‘ইতিহাসজ্ঞানের’ পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে হাস্যাস্পদও করে তুলেছেন।বিরোধীরা বলেন, আরএসএসের সদর দপ্তর ও শাখাগুলোতেও ‘বন্দে মাতরম’ ওই গান গাওয়া হয়নি। এমনকি বহু বছর আরএসএস শাখা ও সদর দপ্তরে স্বাধীন দেশের জাতীয় পতাকাও তোলা হয়নি। একের পর এক বিরোধী নেতা বরং বলেছেন, কংগ্রেস নেতা–কর্মীরা যখন ‘বন্দে মাতরম’ গাইতে গাইতে ফাঁসির মঞ্চে এগিয়ে গেছেন, আরএসএস তখন ব্রিটিশ শাসকদের ‘পক্ষে’ কাজ করেছে।
অমিত শাহ ভোট চুরির অভিযোগ তুললেন জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরার বিরুদ্ধে