Samakal:
2025-11-02@06:24:15 GMT

গ্রীষ্মের গাঢ় রঙ

Published: 24th, April 2025 GMT

গ্রীষ্মের গাঢ় রঙ

যখন গ্রীষ্ম চলছে, এর উত্তাপের প্রতাপ সবটুকু নয়। গ্রীষ্মমণ্ডলের মানুষ কিন্তু এর উপহার দেওয়া রস রূপ রঙের কথাও ভোলে না। শীতমণ্ডলের মানুষের কাছে তো সে গ্রীষ্ম আরও আরাধ্য। যদিও বৈশাখ নামে নয়, সেখানে অন্য নাম আছে। তবু বিশাখা নক্ষত্রের প্রভাব তো আর নাম বদলালে বদলে যায় না। কিছুদিন আগে নববর্ষ এসে মৌলিক রঙের ঢেউ বইয়ে দিয়ে গেল। মৌলিক রঙগুলো কী যে উজ্জ্বল, প্রাণময়, বাঙ্ময়! রঙগুলো যখন কথা বলে, তখন এর মানুষ-দর্শকের কথা থেমে যায়। গ্যালারি ইলিউশনে ‘গ্রীষ্মের রঙ’ নামে একটি প্রদর্শনী গত ১৮ এপ্রিল থেকে চলছে। স্থান পেয়েছে বর্ণিল, অনুপম সমস্ত চিত্রকর্ম। ছবি যারা ভালোবাসেন, দেখতে অথবা সংগ্রহ করতে ব্যগ্র, তাদের জন্যে এ আয়োজন আনন্দদায়ক হবে সন্দেহ নেই। পঞ্চাশজন শিল্পী এতে অংশ নিয়েছেন। একসঙ্গে দেশের অর্ধশত প্রণিধানযোগ্য শিল্পীর কাজ সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করতে পারা এক বড় কাজ। রাজধানীর লালমাটিয়ার গ্যালারি ইলিউশন এ যোগ্যতার পরিচয় যথাসাধ্য দিয়ে চলেছে। প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া দেশবরেণ্য শিল্পীদের ভেতর হামিদুজ্জামান খান, আবদুশ শাকুর শাহ, ফরিদা জামান, বীরেন সোম, জামাল আহমেদ, অলকেশ ঘোষ, সমর মজুমদার, কনকচাঁপা চাকমা, মোহাম্মদ ইউনুস, আফজাল হোসেন, মোহাম্মদ ইকবাল, মাহমুদুর রহমান দীপন, কারু তিতাস প্রমুখ রয়েছেন। হামিদুজ্জামান খানের শিল্পকর্মের নাম সি স্কেপ। সমুদ্রবর্তী মাটির এক রহস্যমিতা চিত্রায়ণ। ছবিটি না-মূর্ত, না-বিমূর্ত। শান্ত সাগরের জল এসে বেলাভূমি ছুঁয়ে যাচ্ছে। কিছু জল কি কোনো খাদে আটকা পড়েছে? সেই জলের রঙ সবুজাভ। যেন সমুদ্র এসে ওইটুকু জলাধারে প্রাণের সঞ্চয় রেখে গেল। ছবিটির দাম পঁচাত্তর হাজার টাকা। আবদুশ শাকুর শাহের ছবিটি তাঁর একান্ত নিজস্ব চিত্রধারার অনুবর্তী। লোকজ পুরাণঘেঁষা। ছবির নাম ভিলেজ স্টোরি। গ্রাম্য মেয়ে তার পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে, প্রকৃতির সঙ্গে লীন। সেখানে আকাশের নীল, ঝরাপাতার হলুদ, টিপের লাল, দেহের শ্যামল রঙ পরস্পরের সঙ্গে সখ্য পাতিয়েছে। দৃষ্টিসুখকর। দাম আশি হাজার টাকা। বীরেন সোম রেখার কাজ করতে ভালোবাসেন। সবচেয়ে বেশি রেখার কাজ তিনি করেছিলেন কভিডের সময়। যখন রঙ কিনতে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। সেই সময় ও পরবর্তীকালে আঁকা তাঁর নিজস্ব চিত্রধারার ছবিগুলো থেকে চোখ ফেরানোর যায় কি? কালো কাগজে সাদা ও রঙিন কলমের টান। চারটি ছবি। দাম ত্রিশ হাজার টাকা। ফরিদা জামান লাল কিংবা লালচের পটে নিজস্ব শৈলীর এক মোহনীয় নারীকে এঁকেছেন, শাড়ি পরিহিত। আমাদের অন্তরে কিছু মনোজ্যামিতি কাজ করে। বাস্তবানুগ ছবির চেয়ে যে ছবি সেই মনোজ্যামিতির কাছাকাছি, সেটিই আমাদের বেশি আপন বোধহয়। মূর্ত-বিমূর্ত ছবিতে ফুল, নারী, বাসন্তী গোধূলি, নদী বালিয়াড়ি একটা লব্ধি মায়া তৈরি করেছে। এ ছবির দাম আশি হাজার টাকা। শিল্পী জামাল আহমেদের শক্তিশালী আঁচড় বাংলাদেশি চিত্রকলায় এক মত্ত সংযোজন। তাঁর ছবি দ্য বিউটি ইন দ্য রিভারে দেখা যাচ্ছে এক কৈবর্ত তরুণীকে, মোহন তার হেঁটে চলার ভঙি। সুবিপুলা নদীর তীরে সেই তরুণী হয়তো প্রিয়জনের জন্যে অপেক্ষমাণ। হাতে জলের কলস। নদীর ওপারে সন্ধ্যা নেমেছে। আকাশ লালাভ। সান্ধ্যমেঘ তাকে কিছুক্ষণ পর ঢেকে দেবে। ছবির দাম এক লাখ টাকা। কনকচাঁপা চাকমার ছবিটির নাম ফেস্টিভ্যাল। চার-পাঁচজন পাহাড়ি তরুণী জড়ো। তাদের মুখ দেখা যায় না। তাদের মুখের ভাষা ধরা পড়ে। প্রাকৃত শরীর, প্রাকৃত রঙে-পোশাকে তারা এমন সজীব, বুঝি গানের শব্দ শুনতে পাওয়া যাবে এখনই। এ ছবির দাম দেড় লাখ টাকা। গুণী তরুণ শিল্পীদের অন্যতম শাহানুর মামুনের সঙ্গে আলাপ হয়। প্রদর্শনীতে তাঁর ছবিটিও নদী ও তীরবর্তী মানুষ, আকাশের গল্প বলে। এই ছবিগুলো আমাদের স্মৃতিতে ধ্রুপদি ছাপ ফেলে রাখা। শাহানুর মামুন জানান মুহূর্তের সৌন্দর্যের কথা। হয়তো নদীর ধারে দাঁড়িয়ে আছেন, আকাশে মেঘেরা খেলছে, সময়টা হয়তো ঘোর দুপুর, এমন সময়, ভর দুপুরে হঠাৎ ভোর নেমে এলো। হয়তো এক মুহূর্তের জন্য। আলো ছায়ার প্রাকৃত খেলা। এক নিমেষে এসেছে, ফিরেও গেছে। কিন্তু রেশ রেখে গেছে। হয়তো আপনার কৈশোর সেই রেশে আবিল। শাহানুর মামুন সেই আবিলতাকে ধরতে চেয়েছেন। সেখানে চলমান সময়ের অস্থিরতাও কি মিশে যায়নি? প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন– গৌতম চক্রবর্তী, রনজিৎ দাস, আফজাল হোসেন, আইভি জামান, রশিদ আমিন, কামাল উদ্দিন, মলয় বালা প্রমুখ। প্রদর্শনীটি ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা।  

অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান। তাদের মধ্যে অন্যতম জুহি চাওলা। ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’, ‘রামজানে’, ‘ডর’, ‘ইয়েস বস’, ‘ডুপ্লিকেট’সহ আরো কিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই জুটি। একসঙ্গে অভিনয় ছাড়াও, এই দুই তারকা বাস্তব জীবনে খুবই ভালো বন্ধু। কেবল তাই নয়, ব্যবসায়ীক অংশীদারও তারা। 

আরো পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

বন্ধু শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন জুহি। এ আলাপচারিতায় স্মৃতিচারণ তো করেছেনই, পাশাপাশি শাহরুখের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।  

শাহরুখের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “আমি যখন প্রথম ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হই, তখন সহপ্রযোজক বিবেক ভাসওয়ানি আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার নায়ক দেখতে আমির খানের মতো।’ আমি শাহরুখকে দেখে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। দেখি, শাহরুখের চুল চোখের ওপরে নেমে এসেছে। আর সে একেবারেই আমার কল্পনার সেই ‘চকলেট বয়’ নয়! যখন কাজ শুরু করি, তখন বুঝতে পারি, সে একদম নতুন অভিনেতাদের মতো নয়, সে পরিশ্রমী, দিনে তিন শিফটে কাজ করছে।” 

একটি ঘটনা বর্ণনা করে জুহি চাওলা বলেন, “আমার মনে আছে, ‘ইয়েস বস’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়, কোনো দৃশ্য ঠিকমতো লেখা না থাকলে পরিচালক আজিজজি (আজিজ মির্জা) বলতেন, ‘শাহরুখ আসুক, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ রোমান্স আর মজার মিশেলে থাকা দৃশ্যগুলো আমাদের সবচেয়ে ভালো ছিল। সেই সূত্রেই আমরা অনেকগুলো সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছি।” 

শাহরুখের পাশে অবস্থান করলে সাবধান থাকার কথার কথা বলেছেন জুহি। হাসতে হাসতে এ অভিনেত্রী বলেন, “শাহরুখের আশেপাশে থাকলে সাবধানে থাকবেন। কারণ সে কথা দিয়ে আপনাকে যেকোনো কিছু করাতে রাজি করিয়ে ফেলতে পারে। ওর কথাবলার ভঙ্গি এমন যে, আপনি ‘না’ বলতেই পারবে না। আমি ‘ডুপ্লিকেট’ সিনেমা করতে চাইছিলাম না, কারণ সেখানে আমার তেমন কিছু করার ছিল না। আমরা তখন আরেকটি সিনেমার শুটিং করছিলাম, আর শাহরুখ আমাকে সিঁড়িতে বসিয়ে দুই ঘণ্টা বোঝায় এবং আমি সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হই। সে আপনাকে যেকোনো কিছু করতে রাজি করাতে পারে, তাই সাবধানে থাকবেন।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “অফস্ক্রিনে আমাদের সম্পর্কেও উত্থান-পতন রয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কোনো না কোনোভাবে আমাদের যুক্ত রেখেছেন, এমনকি আইপিএলের মাধ্যমেও। আমাদের বন্ধন কোনো পরিকল্পনার ফল নয়, এটা একেবারেই ভাগ্যের ব্যাপার।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) সহ-মালিক জুহি ও তার স্বামী জয় মেহতা। এই দলের পেছনে জুহি বিনিয়োগ করেছেন ৬২৯ কোটি রুপি। বর্তমানে এই দলটির মূল্য আছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি রুপি। শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘রেড চিলিস গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠা করেন জুহি। 

১৯৬৫ সালে ২ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহরুখ খান। তার শৈশবের প্রথম পাঁচ বছর কেটেছে ম্যাঙ্গালুরুতে। শাহরুখের দাদা ইফতিখার আহমেদ স্থানীয় পোর্টের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যার কারণে সেখানে বসবাস করেন তারা। শাহরুখের বাবার নাম তাজ মোহাম্মদ খান, মা লতিফ ফাতিমা। 

দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন শাহরুখ খান। তারপর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে গণযোগাযোগ বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। কিন্তু অভিনয় জীবন শুরু করার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। তবে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর দিকে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-তে ভর্তি হন এই শিল্পী। 

১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। 

একই বছর ‘চমৎকার’, ‘দিল আসনা হে’ ও ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় অভিনয় করেন শাহরুখ। তার পরের বছর ‘ডর’ ও ‘বাজিগর’ সিনেমায় অভিনয় করে নিজের জাত চেনান শাহরুখ। তার অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হন কোটি ভক্ত; পৌঁছে যান সাফল্যের চূড়ায়। তার অভিনয়ের খ্যাতি আরো বাড়তে থাকে যশরাজ ফিল্মসের সিনেমায় ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করে। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করেন শাহরুখ। যদিও তার এই সফলতার জার্নির গল্প মোটেও সহজ ছিল। আর সে গল্প সবারই জানা। 

অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন শাহরুখ খান। তার মধ্যে মোট পনেরোবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে আটবার সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। হিন্দি সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন মোট পাঁচবার। তবে শাহরুখ খানের ৩৩ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অধরা ছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। চলতি বছর ‘জওয়ান’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ