সোনারগাঁয়ে ইব্রাহীম ভূঁইয়া দুলু স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট এর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত
Published: 26th, April 2025 GMT
সোনারগাঁয়ে জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক দুইবারের সফল চেয়ারম্যান ইব্রাহীম ভূঁইয়া দুলু স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট সিজন-১০ এর ফাইনাল খেলা জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল চারটায় মালিপাড়া চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠে ইব্রাহিম ভূঁইয়া দুলু স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে এই খেলার আয়োজন করা হয়।
ফাইনাল খেলায় আড়াইহাজার স্পোর্টিং ক্লাব ৪/১ গোলে মুছারচরকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। খেলাশেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দলের মাঝে ট্রফি ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এদিকে ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে মালিপাড়া চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠে দর্শকদের ঢল নামে। কানায় কানায় পূর্ণ ছিল পুরো মাঠ। এতে করে পুরো খেলা জুড়েই মাঠে আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
ইব্রাহিম ভূঁইয়া দুলু স্মৃতি সংসদের চেয়ারম্যান ও জামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি আনোয়ার সাদত সুমনের সভাপতিত্বে ফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফহেত মোহাম্মদ রেজা রিপন, উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার জাহিদ টুলু ভূঁইয়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহাবুর রহমান মাহাবুব, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দেওয়ান শফিকুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ মিলন ভূঁইয়া, মহানগর ১১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন রিপন।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন জামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ- সভাপতি হাজ্বী আব্দুল লতিফ মেম্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক আমির হোসেন আমির, ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজ্বী মুকুল ভুইয়া, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মতিউর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক শাহাআলম হোসেন, সোনারগাঁও থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু মোর্শেদ মোল্লা, শামীম আহমেদ, ফয়সাল ভুইয়া রিপন, সদস্য কামাল ভূঁইয়া, জামপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবুল ভূঁইয়া, সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক বায়েজিদ ভূঁইয়া, জামপুর ইউনিয়ন জাসাস সভাপতি আলমগীর হোসেন, শিমুল, আওলাদ হোসেন, ফয়জুল হক ভূঁইয়া, সেলিম মিয়া, সামির হোসেন, মাসুম মোল্লা, রোকন ভূঁইয়া, শহিদুল্লাহ, নয়ন, শরীফসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ফ টবল ন র য়ণগঞ জ উপস থ ত ছ ল ন ন র য়ণগঞ জ ফ ইন ল খ ল ব এনপ র স র রহম ন স ন রগ
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।