মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।

শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের উত্তর ইসলামপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়।

আহতরা হলেন- আশ্রাফ আলী (৪৫) তার ছেলে হৃদয় (১৫), হৃদয়ের মামাতো বোন সুরাইয়া আক্তার (২০), তাছলিমা বেগম (৩০), জাহিদ (১৮), আয়নালসহ (৪৫) মোট ১০ জন। গুরুতর আহত আশ্রাফ আলী, তার ছেলে হৃদয় ও মামাতো বোন সুরাইয়া আক্তারকে ঢাকা মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা সিরাজদীখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বিকেলে উত্তর ইসলামপুর গ্রামে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মো.

ফয়সালের (৩৮) ছেলে সজিবের (১৬) সঙ্গে একই এলাকার আশ্রাফ আলীর ছেলে হৃদয়ের (১৫) কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে শনিবার সকালের দিকে দুপক্ষের মধ্যে সংষর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়। এ সময় কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়।

আহত আশ্রাফের স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, ফয়সাল ও তার লোকজন নিয়ে আমার স্বামী, ছেলে ও আমার দেবরসহ অনেককে বটি দিয়ে কুপিয়েছে এবং আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে।

তবে অভিযোগ অস্বিকার করে মো. ফয়সাল বলেন, আমাদের কেউ বাড়িঘর ভাঙচুর করেনি। এখানে তৃতীয় পক্ষের লোকজন সুযোগ নিয়েছে।

সিরাজদীখান থানার ওসি সাহেদ আল মামুন বলেন, দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে বলে জেনেছি। শনিবার রাত পর্যন্ত এখনও কোনো পক্ষ থানায় আসেনি। থানায় আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত ১০ জন

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ