বরগুনায় দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড
Published: 27th, April 2025 GMT
বরগুনায় নিজের মেয়েসহ দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যায় এক জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদাউস এই আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- বরগুনা সদরের পূর্ব গুদিঘাটা এলাকার ইলিয়াস পহলান (৩২)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট ইলিয়াসের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী তার তিন বছরের মেয়ে তাইফা ও প্রতিবেশী খবির হাওলাদারের দশ বছরের শিশু হাফিজকে নিয়ে ঘুমচ্ছিলেন। ওই রাতে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন ইলিয়াস। এসময় দুই শিশুর ঘুম ভেঙে যায় এবং তারা ডাক-চিৎকার করে। পরে দুই শিশু ও তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে কুপিয়ে পালিয়ে যান ইলিয়াস। এতে ঘটনাস্থলেই হাফিজুল মারা যান, আর বরিশালে নেওয়ার পথে মারা যায় তাইফা। এ ঘটনায় ইলিয়াসকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
আরো পড়ুন:
মাগুরার শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ
টাঙ্গাইলে শ্রমিকদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট রঞ্জুয়ারা শিপু বলেন, ‘‘মামরায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এই রায় ঘোষণা করেছেন। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট।’’
আসামিপক্ষের আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু বলেন, ‘‘এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যাকাণ্ড হয়নি। আমরা দণ্ড কমানোর জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করব।’’
ঢাকা/ইমরান/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য বরগ ন
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।