গরমের তীব্রতা বাড়ছে। এ সময় শরীরে আর্দ্রতা বজায় রাখতে পর্যাপ্ত পানি পানের বিকল্প নেই। এর পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় এমন কিছু পানীয় রাখা উচিত যা শরীরের ঘাটতি পূরণ করার পাশাপাশি, ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়া খনিজের অভাবও পূরণ করে।
পুষ্টিগুণে ভরপুর বেলের শরবত তাপপ্রবাহের অস্বস্তি, রোদের জ্বালাপোড়া ভাব, দূর করতে ভূমিকা রাখে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত বেল খেলে চুল ও ত্বকের উজ্জ্বলতাও ফিরে আসে।
বেলে থাকা অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে। ত্বকের একাধিক রোগ নিরাময় করারও ক্ষমতা রয়েছে বেলের। চুলেরও অনেক রোগের সঙ্গে লড়াই করতে পারে এই ফলটি।
ত্বকের জন্য বেল যেভাবে উপকারী
ত্বকের র্যাশ দূর করে
বেল গাছের মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি অর্থাৎ প্রদাহনাশক গুণ থাকায় তা ত্বকের স্বাস্থ্যরক্ষায় খুব কার্যকরী। কেবল ফল নয়, বেল পাতা ও বেলের তেল ক্ষতিকারক ছত্রাককে ধ্বংস করতে ভূমিকা রাখে। এর ফলে ত্বক সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচে। বেল ফল ত্বকের র্যাশ এবং চুলকানি কমাতেও ভূমিকা রাখে।
ত্বকে প্রদাহ দূর করে
বেল ফল, শিকড়, গাছের খোসা, পাতা এবং ফলের অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং প্রদাহনাশক গুণাবলি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। ত্বকে লাল ভাব দেখা দিলে অথবা ফুলে গেলে বেল খেতে পারেন।
কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি করে
বেল ফলে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। নিয়মিত এই ফল খেলে ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। নিয়মিত এই ফল খেলে ত্বকে বার্ধক্য রোধ হয়।
চুলের জন্য বেল যেভাবে উপকারী
প্রাচীন কাল থেকেই চুল মজবুত করতে বেল ফলের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। বেলে থাকা অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল বৈশিষ্ট্য ফলিকিউলাইটিস, চুলকানি এবং খুশকির মতো মাথার ত্বক এবং চুলের সংক্রমণ থেকে মুক্ত করে। এই ফলে থাকা পুষ্টি উপাদান চুলের ফলিকলগুলিকে সক্রিয় করে তোলে। মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত মজবুত করে চুলকে। স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ স্বাভাবিক করে। এর ফলে মানসিক চাপের কারণে চুল পড়ার সমস্যা কমে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা