পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ নিতে হলে বিনিয়োগ থাকতে হবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা। এছাড়া থাকতে হবে নিয়মিত আয়ের উৎস। আর বিনিয়োগের ৬ মাসের আগে ঋণ পাবে না কোনো বিনিয়োগকারী। একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড এবং কোম্পানির হিসাবেও মার্জিন ঋণ দেওয়া হবে না। চূড়ান্ত মার্জিন ঋণ নীতিমালায় এসব সুপারিশ করেছে পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মার্জিন রুলস- ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত সুপারিশ প্রসঙ্গে এসব তথ্য তুলে ধরেন পুঁজিবাজার টাস্কফোর্সের সদস্যরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন এবং পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপের সদস্য প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান।

টাস্কফোর্সের সদস্যরা বলেন, পুঁজিবাজার অংশীজনদের সাথে আলোচনা করেই সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে টাস্কফোর্স। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর ৩ মাসের আগে মার্জিন ঋণ না দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে, মার্জিন নিয়ে শেয়ারবাজারে কারসাজি বন্ধ হবে। মার্জিন ঋণ নিয়ে সুশাসন না থাকায় বিপুল অংকের নেগেটিভ ইক্যুইটি সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে বিনিয়োগকারীর পাশপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পুঁজিবাজার। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং মার্জিন খারাপ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হয়েছে। যে কারণে অনেক বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে গেছে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা টাস্কফোর্সের মূল্য উদ্দেশ্য।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, অনেক স্টেকহোল্ডার দাবি করছেন তাদের সাথে বসা হয়নি। অথচ আমরা দেখলাম তাদের সাথে আমরা ৩ বারও বসে ফেলেছি। তবে কেন এরকম মিস কমিউনিকেশন। আমরা অংশীজনদের বাহিরেও যারা বাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ তাদের সাথেও আমরা বসেছি। এরপরেও যদি মনে হয় আমরা কিছু বাদ দিয়েছি বা গ্যাপ ছিল, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে জানালে তা আমরা যুক্ত করে দিব। তবে অংশীজনদের থেকে বেশি আমরা সাধারণ মানুষদের থেকে অনেক কিছু পেয়েছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, প্রতিদিন পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে। যার কারণ বাজার অচল অবস্থায় চলে গেছে। সে অবস্থাটাকে মাথায় রেখে আমরা চিন্তা করেছি, এর অন্যতম কারণ হলো মার্জিন রুলস। কারণ মার্জিন রুলসটা যদি প্ল্যান করে দেওয়া হতো, গভর্নেন্সটা যদি সঠিক থাকতো, তাহলে এ ধরনের অবস্থা তৈরি নাও হতে পারতো। তাই মার্জিন রুলসকে আমরা টপ প্রায়োরিটি আইটেম ধরেছি। পৃথিবীতে মার্জিন রুলসকে শর্টটার্ম ওয়ে হিসেবে নেওয়া হয়। কোথাও কোথাও ১:৩/৪ রেশিওতে মার্জিন ঋণ দেওয়া হচ্ছে৷ এগুলা কিভাবে হয়েছে? এরপর বাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি ক্রিয়েট হয়েছে। আমরা চাচ্ছি এই জিনিসগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি বাজারে না হয়। মার্জিন নিয়ে আর গ্যামব্লিং করা যাবেনা। মার্জিন নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেষ করে দেয়া হয়েছে। এতো পরিমাণ নেগেটিভ ইক্যুইটি না থাকলে বাজারের আজ এই পরিস্থিতি হতো না।

হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন বলেন, আমাদের কাজে সহযোগিতা করেছে ফোকাস গ্রুপ। মূল কাজ করেছে টাস্কফোর্স। আমরা কাজ করতে যেয়ে পাবলিকের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকেও পেয়েছি, তবে পাবলিক থেকে পরামর্শ বেশি এসেছে। এটা খুব ভালো বিষয়। কারণ যত বেশি পরামর্শ আসবে, আমরা তত বেশি রিফাইন করার সুযোগ পাব।

সংবাদ সম্মেলনে একটি উপস্থাপনায় পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপের সদস্য প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আজকে আমার খুবই ভালো লাগছে যে, এই প্রথম বাংলাদেশে আইনি ফরমেশন করতে যাচ্ছি, যেখানে ব্রেইন স্টর্মিং ড্রাফটিং হয়েছে গ্রাউন্ড লেভেল থেকে। এ মার্কেটে যারা কাজ করেন, তাদের আইডিয়াগুলো নিয়েই ড্রাফট করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বিএসইসির ওয়ার্কিং টিমের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। এছাড়া মার্কেটের বড় বড় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব নিয়ে মার্জিন রুলস- ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত সুপারিশ তৈরি করেছি।

এর আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ স্বাক্ষরিত আদেশে ‘পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স’ গঠন করা হয়। গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা আকবর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন।

ঢাকা/এনটি/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ন ঋণ ন ন বল ন সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন

দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রাইম ইউনিভার্সিটি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য আবেদন আহ্বান করেছে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা পূর্ণকালীন এই শিক্ষকের পদে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

কোন কোন বিভাগে নিয়োগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, আইন, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই), কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) এবং ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং—এই ছয়টি বিভাগে অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। পদটি পূর্ণকালীন। অধ্যাপক পদে আবেদন করার জন্য প্রার্থীর শিক্ষাজীবনে কমপক্ষে দুটি প্রথম শ্রেণি/বিভাগ/এ গ্রেড থাকতে হবে। তবে কোনো প্রার্থীর শিক্ষাজীবনে তৃতীয় বিভাগ বা সি গ্রেড গ্রহণযোগ্য হবে না।

পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের জন্য: যেসব প্রার্থীর পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি রয়েছে, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বা সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই অভিজ্ঞতার মধ্যে কমপক্ষে ৫ বছর সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। পাশাপাশি, তাঁদের মোট ১৫টি প্রকাশনা থাকতে হবে, যার মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক পদে থাকাকালীন অন্তত ৭টি প্রকাশনা থাকতে হবে।

এমফিল ডিগ্রিধারীদের জন্য: এমফিল বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কমপক্ষে ১৮ বছরের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। এই ১৮ বছরের মধ্যে ৬ বছর সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রেও মোট প্রকাশনার সংখ্যা কমপক্ষে ১৫টি হতে হবে এবং এর মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ৭টি প্রকাশনা আবশ্যক।

আরও পড়ুনসহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুই ধাপের লিখিত পরীক্ষা ২ জানুয়ারি১০ ডিসেম্বর ২০২৫

স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের জন্য: চার বছর বা তিন বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) সহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের শিক্ষাজীবনে কমপক্ষে তিনটি প্রথম শ্রেণি/বিভাগ/এ গ্রেড থাকতে হবে। তাঁদের মোট ২০ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা প্রয়োজন, যার মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ৭ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। প্রকাশনার ক্ষেত্রে মোট ১৫টি প্রকাশনার শর্ত প্রযোজ্য হবে, যেখানে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ৭টি প্রকাশনা থাকতে হবে।

আরও পড়ুনপ্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ পরীক্ষার সূচি প্রকাশ৬ ঘণ্টা আগেসুযোগ-সুবিধা

নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যাপকের কাছে তাঁর সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের একাডেমিক উন্নয়নের জন্য নতুন ধারণা তৈরি করার সক্ষমতা আশা করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে মান উন্নয়নের প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী এবং দলগত কাজে উৎসাহী হতে হবে। নির্বাচিত প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী আকর্ষণীয় বেতন ছাড়াও সাপ্তাহিক দুই দিন ছুটি, বার্ষিক বেতন পর্যালোচনা, প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং দুটি উৎসব বোনাসসহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন। ঢাকা শহরে অবস্থিত এই কর্মস্থলের যোগাযোগ ব্যবস্থাও বেশ সুবিধাজনক।

আরও পড়ুনএ সপ্তাহের (৫-১১ ডিসেম্বর) সেরা ১০ চাকরি: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা-বিদ্যুতে বড় নিয়োগ১২ ডিসেম্বর ২০২৫যেভাবে আবেদন করবেন

বিডি জবসের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করা যাবে অথবা আগ্রহী প্রার্থীদের সদ্য তোলা পাসপোর্ট আকারের ছবিসহ হালনাগাদ জীবনবৃত্তান্ত এবং সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের ফটোকপি নিম্নলিখিত ঠিকানায় রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠাতে হবে: প্রাইম ইউনিভার্সিটি, ১১৪/১১৬, মাজার রোড, মিরপুর-১, ঢাকা-১২১৬।

আরও পড়ুনচট্টগ্রাম ওয়াসা ৯ম-১০ম গ্রেডে নেবে ২১ জন, আবেদনের সুযোগ বছরের শেষ দিন পর্যন্ত৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন
  • পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
  • মালেক স্পিনিংয়ের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়