কলকাতায় আবাসিক হোটেলে অগ্নিকাণ্ড, ১৪ মরদেহ উদ্ধার
Published: 30th, April 2025 GMT
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় একটি আবাসিক হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। কলকাতা পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে।
বড়বাজার এলাকার বহুতল ঋতুরাজ হোটেলে গতকাল রাত সোয়া আটটার দিকে ওই আগুন লাগে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
আজ বুধবার সকালে পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, বড়বাজারের মেছুয়ার ফলপট্টির হোটেলটিতে ৪৭টি কক্ষ রয়েছে। প্রায় প্রতিটি কক্ষে মানুষ ছিলেন। প্রায় ৮ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও উদ্ধারকাজ এখনো চলছে। ঘন ধোঁয়ার কারণে হোটেলের ভেতরে ঢুকতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের অনেক সময় লেগে যায়।
আনন্দবাজার আরও জানিয়েছে, আনন্দ পাসোয়ান নামের একজন আগুন থেকে বাঁচতে বহুতল হোটেলটির ওপর থেকে ঝাঁপ দেন। উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এক এক্স পোস্টে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের উদ্ধার করার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঠেকাতে অগ্নিনিরাপত্তায় ‘কঠোর নজরদারি’র আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অগ্নিকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার কলকাতা করপোরেশনের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?