নিয়ন্ত্রণরেখায় ষষ্ঠ দিনের মতো ভারত–পাকিস্তানের গোলাগুলি
Published: 30th, April 2025 GMT
ভারত-পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) রাতে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে টানা ছয় দিন কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটল।
আজ বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
কলকাতায় হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিহত ১৪
৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালাতে পারে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী
গত মঙ্গলবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গুলিতে ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে উত্তেজনা কার্যত চরমে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রতিদিনই সীমান্তে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানি সেনারা নিয়মিতভাবেই নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতেও পাকিস্তানি সেনাদের পক্ষ থেকে ‘ছোট অস্ত্রের উসকানিমূলক গুলিবর্ষণের’ ঘটনা ঘটেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, “২৯-৩০ এপ্রিল রাতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পোস্টগুলো বিনা উসকানিতে নওশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টরের বিপরীতে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালায়। ভারতীয় সেনারা পরিস্থিতির যথাযথ মূল্যায়ন করে সংযত ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।”
গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় ভয়াবহ সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এই ঘটনায় পাকিস্তানকে পরোক্ষভাবে দায়ী করে ভারত। নয়াদিল্লির অভিযোগ সীমান্ত সন্ত্রাসবাদে সমর্থন করছে ইসলামাবাদ।
এর জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা বাতিল এবং প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধ এবং ভারতীয় বিমানকে আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে, যেন গঠনমূলক পারস্পরিক আলোচনার মধ্য দিয়ে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান করা সম্ভব হয়।
সাত দশকের বেশি সময় ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, দুই দেশই এই অঞ্চল সম্পূর্ণ নিজেদের দাবি করে, তবে নিয়ন্ত্রণ করে আংশিকভাবে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।