কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় জামায়াত নেতাকে হুমকী দেওয়া উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক মো. আনিছুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কুড়িগ্রাম জেলা শাখা।

বৃহষ্পতিবার (১ মে) কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ্ব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়।

নোটিশে বলা হয়, “সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে আপনি প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান, অসংলগ্ন ও উত্তেজনাপূর্ণ ভাষায় বক্তব্য প্রদান করছেন এবং একটি রাজনৈতিক দল সম্পর্কে অশালীন ও অবমাননাকর মন্তব্যও করেছেন। ভিডিওতে ব্যবহৃত ভাষা এবং বক্তব্য সামগ্রিকভাবে দলীয় শৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক সহনশীলতার পরিপন্থী।”

“এ কারণে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা পত্র প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য বলা হইলো।”

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই বিএনপি নেতা আনিছুর রহমানের অসঙ্গতিপূর্ণ কথা, হুমকি প্রদর্শনের একটি ভিডিও ভাইরাল হলে জেলা বিএনপি তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে।
রাজারহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমানের এসব কথার ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এই ভিডিও নিয়ে চলে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে রাজারহাট উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক মো.

আনিছুর রহমান বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রাজারহাট শাখার বায়তুলমাল সম্পাদক রুবেলকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন, “কলিজা টানি ছিড়ি ফেলবো-একবারে টানি ছিড়ি ফেলবো তোমার। চেনো তুমি? এ চেনো! খুব পাওয়ার দেখাও, একবারে নিশ্চিহ্ন করে দেব তোমাক, চেনো বিএনপিকে? তোমার নামে আমি মামলা দেবো। আমি থানা যায়া ওখানে লিখবো, উয়াক অ্যারেস্ট করি দিয়ে তারপরে আমি আসবো।” 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জামায়াত নেতা রুবেল মিয়া বলেন, “গত মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার চান্দামারী দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে অভিভাবক সমাবেশে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি পদ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে বিকেলে থানা মোড় এলাকায় আমায় ডেকে নিয়ে আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন আমাকে চড়থাপ্পড় মারেন। লাঞ্চিত ও গালিগালাজ করেন। এ বিষয়ে এখনো মামলা করিনি। তবে দলের (জামায়াতে ইসলামী) ঊর্ধ্বতন নেতা–কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলা করব।”

এ বিষয়ে জানতে রাজারহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমানের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/বাদশাহ্/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের  নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”

মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।” 

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ